Spread the love

খায়রুল আনাম,

কী হতে পারে, আর কী হতে পারে না। এমনই এক সংশয় এখন কাজ করছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট পরবর্তী সময়ে। শাসকের বিরুদ্ধে লাগামহীন সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিরোধীরা বেশ কিছুদিন যে হল্লাবোল চালিয়ে যাবে, তা অনিবার্য সত্য। সামনের ১১ তারিখ ভোট গণনার দিনের সন্ত্রাস ৮ তারিখের ভয়াবহতাকে ছাড়িয়ে যাবে কী না, সে প্রশ্ন নিয়ে এখন থেকেই মাথা চুলকানো বুদ্ধিজীবীরা নিশ্চয়ই লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে বোকা বাক্সে বন্দি হয়ে সারগর্ভ এমন সব ভাষণ দেবেন, যাতে উত্তেজনা ছড়ালে ছড়াতে দাউ, ‘আমি তো আগেই বলেছিলাম’ শব্দবন্ধে পুনরায় দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে বিতিকিচ্ছিরি কাণ্ড ঘটিয়ে যাবেন। ভাতাজীবী শ্রেণিদের আবার দুকূল রাখতে হয়। যাতে একদিকে ভাতার অনিবার্য সুবিধাভোগ আর আম জনতার পাশে থাকার মহতী ভাবটা বজায় রাখতে হয়। সই সংগ্রহ করে প্রচারপত্র বিলি আর বিবৃতি বিলাসিতা, এই দু’টোর কোনটাই তাঁরা খোয়াতে চান না। কেন্দ্রীয় বাহিনী পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেলে ধর্মতলা থেকে একটা পদযাত্রারও আয়োজন হতে পারে। যাতে তাঁদের শিরায় আর পায়ের পাতায় জোর থাকুক আর না থাকুক, প্রচারের ক্যামেরার ঝলকানিটা যেন অনিবার্য থাকে। সে নিশ্চয়তা নিয়েই তো তাঁরা হাঁটবেন। আর তাতে যদি পুত্রশোকে কাতর মা-কে ঘণ্টাখানেকের জন্য সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায় কিংবা স্বামীহারাকে যদি সাজিয়ে-গুছিয়ে উপস্থাপন করা যায় তাহলে ওই কী যেন বলে, টিআরপি বাড়বে অনায়াসেই। ময়দানের লড়াই ছেড়ে প্রচারের স্ক্রিনশটের চাহিদাটাই যে এখন অতি জরুরি। রাজনীতির লড়াইয়ের রূপটা দেখা না গেলেও, প্রচারের শতরূপ দেখাতে বাধাটা কোথায়? সন্তান হারা মা বা স্বামীহারা সাদা থানের কেউ তো আর তাঁদের দিকে কালি ছেটাবে না। রঙ মহলের রঙ তামাশায় সকলেই তো বসে পড়ছে একই পঙতির ভোজন-আসনে। এখানে বিরোধীতার ঠাঁই কোথায় পাই-তো বলুন ভাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *