হাইকোর্ট চত্বরে বন্দেমাতরম্ অনুষ্ঠান,


সুবল সরদার

‘বন্দেমাতরম্ ‘ র ১৫০ বছর অনুষ্ঠান পালন করলেন হাইকোর্টের বিজেপির আইনজীবী সংগঠন। সময় ২ থেকে ৫ টা, ইডেনগার্ডেনে । উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্রাচার্য। উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্টের বার এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি শংকর প্রসাদ দলপতি,বার এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সহ অন্যান্য আইনজীবীগণ -ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়, বিল্বদল ভট্টাচার্য্য,অনুপম দাশগুপ্ত,ড: সিদ্ধার্থ গোস্বামী, গৌতম সরদার , সানন্দা ভট্টাচার্য্য আরো অনেক । সংক্ষিপ্ত এবং বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান ।। অনুষ্ঠানের পূর্নাঙ্গ রূপদান এবং সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করার জন্যে বারের সেক্রেটারি শংকর প্রসাদ দলপতিকে ধন্যবাদ জানাতেই হয় ।
আমি শুধু ভাবি একটা শব্দ বন্দেমাতরম্ তার কী অসীম ক্ষমতা ! এই একটি মাত্র ধ্বনি ইংরেজদের বুকের কাঁপুনি কিভাবে বাড়িয়ে দেয় ,অবশেষে তারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় ! সাহিত্য সম্রাট ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রথম এই গানটি লেখেন ১৮৭৫ সালে এবং বঙ্গদর্শনে ছাপা হয়। পরবর্তী কালে ১৮৮২ সালে তাঁর অমর উপন্যাসে স্থান দেন। তারপর থেকে শুধু ইতিহাস। ১৯০৯ সালে এটি প্রথম ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ঋষি অরবিন্দ ঘোষ ‘Mother I bow to thee.’ এই গানটি প্রথম সুর দেন মল্লাররাগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গীত গুরু যদুনাথ ভট্ট। পরে রবি ঠাকুর নিজেই সুর দেন দেশরাগে। ১৮৯৬ সালে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে এই গানটি প্রথম গাওয়া হয়। ১৯০৫ সালে হীরালাল সেন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন যেখানে বন্দেমাতরম্ গান দিয়ে সমাপ্ত হয়। ১৯০৪ সালে সিস্টার নিবেদিতা জাতীয় পতাকায় প্রথম বন্দেমাতরম্ লেখেন। ২০০২ সালে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ৭০০০ গানের মধ্যে থেকে দুটো গান বেছে নেয়, তারমধ্যে অন্যতম বন্দেমাতরম্। ১৯৫০ সালে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ গানটি ‘জনগনমন ‘জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে ‘বন্দেমাতরম্’ জাতীয় স্তোত্র হিসেবে ঘোষণা করেন। পরবর্তী কালে হেমন্তের সুরে লতা মঙ্গেশকরের কন্ঠে যেটা আজ আমরা যাদু মন্ত্রের মতো শুনি। মা এবং দেশ, দেশ এবং মা অভিন্ন রূপে বন্দিত হয় দেশ বন্দনায়। মাতৃ বন্দনার এমন রূপ পৃথিবীর আর কোনো দেশে পাওয়া যায় না। হাজার অ্যাটোম বোমার থেকে বেশি শক্তিশালী।‌ উত্তর প্রদেশে সরকার ‘বন্দেমাতরম্’ গানটি গাইতে স্কুল,কলেজে বাধ্যতামূলক করছে ।
পুনশ্চ – ‘ বন্দেমাতরর্মে’র ১৫০ বর্ষ পূর্তি উদ্যাপন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বন্দেমাতরম্’ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন নিজে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অর্থাৎ বিচারক ছিলেন। আইনের সঙ্গে তাঁর নাড়ির সম্পর্ক। ঐতিহ্যবাহী হাইকোর্টের আইনজীবীরা তার পরম্পরা মেনে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গভীর টানের অনুভবে যা অনেক প্রশংসার দাবী করে ।

Leave a Reply