হাইকোর্টের কড়া মনোভাবে হাঁসখালির নির্যাতিতার পরিবার পেল ক্ষতিপূরণ
মুকুল বিশ্বাস ,
চলতি সপ্তাহে পরপর দুদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে হাঁসখালিতে ধর্ষণ ও খুনের মামলা নিয়ে শুনানি চলে। গত সোমবার নিহত নির্যাতিতার পরিবার কে আর্থিক ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় আইনী সহায়তা বিভাগ কে চরম ভৎসনা করে ডিভিশন বেঞ্চ। ভৎসনা পরবর্তীতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেয় ওই আইনী কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার শুনানি পর্বে জানানো হয় এই মিটিয়ে দেওয়ার বিষয়টি। নদিয়ার হাঁসখালি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় আইনি সহয়তা পরিষেবার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট । এই ঘটনায় এর আগে নির্যাতিতার পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ ।
তবে সেই নির্দেশের পর ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি গত সোমবারের আগে পর্যন্ত । উল্টে মামলা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানায় ওই আইনী কর্তৃপক্ষ । তাদের এহেন আচরণে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। এরপর মঙ্গলবার অর্থাত্ এদিন লিগল সার্ভিস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার ছিল শুনানি পর্ব। সেই সময় প্রধান বিচারপতি লিগ্যাল এইডের আইনজীবীকে এজলাসে বলেন, – “লিগাল সার্ভিস অথরিটিকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। কিছু অস্পষ্ট শব্দ বলে বিষয়টিকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। আপনাদের জন্য কত মানুষ ভুগতে হচ্ছে! এত গুরুত্বপূর্ণ মামলায় কেন আপনারা ইনস্ট্রাকশন না নিয়ে আসেন? দায়সারা ভাবে কাজ হয় না। যেখানে নির্দিষ্ট স্কিম আছে, সেখানে আবার আলাদা ইনস্ট্রাকশন দরকার কি আছে?”উল্লেখ্য, নদীয়ার হাঁসখালিতে তরুণীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে মৃতের পরিবারকে এখনও অবধি নিদির্ষ্ট প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিপূরণ দেয়নি রাজ্য সরকার। এই ইস্যুতে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। অথচ ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ দেওয়া দূরে থাক, উল্টে শুনানির দিন দীর্ঘায়িত করার আবেদন করে ‘লিগাল সার্ভিসেস অথরিটি’। সেই কারণে বিরক্ত প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার লিগল সার্ভিস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় নির্যাতিতার পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় অন্য আরেক একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে, যেখানে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয়েছে, সেই মামলার শুনানি রয়েছে আগামী ৩০শে জানুয়ারি ।