স্বরলিপি,
সুজান মিঠি
তোমার বাম চোখের পাতা কাঁপছে
কী বলছে আমি জানি, শুনবে?
ও বলছে, এত ভালোবাসো কেন আমায়?
বা রে! ভালোবাসার দাওয়ায় বসে ভালোবাসা
ভালোবাসব না, তাই কি হয় বলো?
ওই দেখ, বাম ভ্রু হেসে উঠল তোমার
আমি বুঝি! বুঝি…
ও হেসে আমার হাত ছুঁতে চাইছে।
মনের উপর রাখতে চাইছে নিঝুম শান্তি
কী বলছ? ডান চোখের ভাষা?
হ্যাঁ তাও শুনছি…
তোমার ডান চোখ আর ডান ভ্রুতে জিজ্ঞাসা,
কী করে তোমায় বুঝি আমি?
কী করে ঠিক ঠিক তুলে আনি তোমার প্রিয়
কলমি শাক, চাল কুমড়ো, মিষ্টি আলু!
কী করে তোমার নাভির গভীরে সমুদ্র খুঁজে পাই!
কী করে বা তোমার পর্বতের মধ্যে আমার রামধনু
এঁকে রাখি!
কী করে বা চিৎকার করে বলি, ভালোবাসা ভালোবাসতে জানে!
এই এত প্রশ্ন যে জমা রেখেছ ওদের ইশারায়,
ওরা তো ক্লান্ত হয়ে যাবে!
তার চেয়ে এস ফুল ফুল খেলি।
তোমার চুলে এই গুঁজে দিলাম মাধবী
তুমি রজনীগন্ধা থেকে শুরু কর!
আমি গোলাপ, তুমি হাস্নুহানা
আমি শিশির ভেজা ভোর
তুমি পা ফেলে এগিয়ে যাওয়া রোদ্দুর…
তোমার মনে আছে, আমার দিকে ঘৃণা
ছুঁড়েছিলে কেমন একদিন? বলেছিলে এমন
একজন, যে কিনা…
আহা কথা চেপে ধরছ কেন আমার?
থাক বলছি না তবে আর।
কিন্তু এরপর যদি কোনোদিন আবার
বাবুই কোয়েল পাপিয়া আসে
তোমার ঘুম ভাঙায়
তোমার ঠোঁটে রাখে গান
তোমার চোখে রাখে রঙ
তুমি কী বলবে তাদের?
বলবে কি, যা পাখি তোরা অন্য কোথা যা!
এই দেখ, আমার দিকে তাকাও।
আমার বুকের দিকে…
এবার তুমি বলো তো, কী বলছে আমার স্পন্দন?
হ্যাঁ একদম ঠিক!
বলছে, জোয়ারের মত আছড়ে পড়ো এ শুষ্ক
বন্দরে…
ভালোবাসো, ভালোবাসো, ভালোবাসো খুব…
আরে আরে…ওই দেখো তিনটে শালিখ নেমে আসছে
ঝগড়া করতে করতে!
বলছে, মূক বধির মানুষ কী করে এমন কথা
বুনতে পারে?
সব মিথ্যে! সমস্তটাই ছলনা!
ওগো, হাত ধরো আমার।
চলো আমরা দুই দোয়েলে
ওদের ঝগড়া থামিয়ে
হৃদয়ের স্বরলিপি চিনিয়ে দিই।