খায়রুল আনাম, বীরভূম : রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের ঠেলাঠেলি আর গুঁতোগুঁতিতে কে কতখানি জায়গা দখল করতে পারলেন, আর কার পায়ের তলা থেকে কতখানি মাটি সরে গেল, এনিয়ে হামেশাই চর্চ্চা হয়ে থাকে। শনিবার ১৪ জুন কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর ভবানীপুরের প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের কার্যালয়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে যে বৈঠক হয়ে গেল, সেখানে বীরভূম জেলা নিয়ে নজিরবিহীনভাবে পৃথক বৈঠক হয়েছে। মূলতঃ আগামী ২১ জুলাই কলকাতায় প্রতি বছরের মতো এবারও তৃণমূল কংগ্রেস যে শহীদ দিবস পালন করবে তাতে কোন জেলা কত লোক পাঠাতে পারবে, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ২১ জুলাই এর পরই নানুরের সূচপুর গণহত্যা দিবস নিয়ে ২৮ জুলাই যে সূচপুর গণহত্যা দিবস পালিত হবে, সে ব্যাপারে কিন্তু এদিন কোন আলোচনা হয়নি। অথচ সূচপুর গণহত্যা তৃণমূল কংগ্রেসকে এ রাজ্যে ক্ষমতায় আনতে একটা নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে সে সময় বিবেচিত হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী । সে সময় বোলপুরের সাংসদ ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। সূচপুর বোলপুর লোকসভারই অন্তর্ভুক্ত। সময় এবং তারিখ স্পষ্ট করে দিচ্ছে সূচপুর গণহত্যার ২৫ বছর। সূচপুরে সিপিএমের হাতে খুন হওয়া ১১ টি মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়ে বাসাপাড়ায় শপথ করেছিলেন, তিনি যতদিন বাঁচবেন ২৭শে জুলাই বাসাপাড়ায় আসবেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার তিন বছর আগে থেকেই সূচপুর গণহত্যা দিবসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাসাপাড়ায় আসেন না । অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি আর বাসাপাড়ার মাটিতে পা দেননি। সত্যিই এ বড় আশ্চর্য বিষয়। এই সন্ধিক্ষণেই ১০ জুন চলে গেলেন আব্দুল খালেক। বাসাপাড়া এলাকার পুরন্দরপুরের মানুষ ছিলেন তিনি। তিনিই ছিলেন এই গণহত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী। সিপিএমের দিক থেকে অনেক প্রলোভন থাকা সত্ত্বেও কিন্তু আব্দুল খালেক বিরূপ সাক্ষী হননি।যার ফলে সূচপুর গণহত্যায় অভিযুক্ত ৪৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। অথচ এই আব্দুল খালেকের এক সময় সূচপুর গণহত্যা দিবসের মঞ্চে স্থান হয়নি। এবার কী প্রায়শ্চিত্ত করতে ২৭ জুলাইয়ের মঞ্চ হবে আব্দুল খালেকের নামে। অবশ্যই রইলো সেই প্রশ্ন।