সিবিআই অফিসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় মামলাকারী সৌমেন নন্দী,
মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু ,
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে গতি ক্রমশ বাড়ছে সিবিআইয়ের। এসএসসির পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে মামলাকারী কে তলব করে থাকে সিবিআই। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় মামলাকারী সৌমেন নন্দীর ডাক পড়েছিল সিবিআই দফতরে। রবিবার সকালে সিবিআই দপ্তরে নিজাম প্যালেসে আসেন প্রাথমিক টেটের মামলাকারী সৌম্যেন নন্দী,সাথে ছিলেন তাঁর আইনজীবী । গত ২০১৪ সালের প্রাথমিকে ফেল করেও অনেকে চাকরি পেয়েছে, এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন সৌম্যেন নন্দী। সম্প্রতি এসএসসির পাশাপাশি প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আদালত সুত্রে প্রকাশ, গত ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন সৌমেন নন্দী। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন অকৃতকার্য অনেক প্রার্থীই চাকরি পেয়েছেন। কিভাবে অকৃতকার্যরা চাকরি পেল? তা জানতে চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের দারস্থ হয়েছিলেন সৌমেন। বেশ কয়েকবার আরটিআই করেন তিনি। ৬৮ জন প্রার্থীর নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হলে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের কাছে,তবে প্রতুত্তরে মেলেনি কোন সদুত্তর। এরপরেই আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের হাত ধরে সৌমেন নন্দী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, একজন টেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পরেও চাকরি করছেন সে! এই তথ্যও সৌমেন তুলে ধরেন কলকাতা হাইকোর্টের কাছে। এই মামলার জেরেই টেট দুর্নীতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরে ।উল্লেখ্য, প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারির নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ। প্রাথমিক অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই হাইকোর্ট সিবিআইকে নতুন করে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে গতি আনার নির্দেশ দেয়।তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর সিবিআইয়ের তরফে ডেকে পাঠানো হয় মামলাকারীকে। তাঁর কাছ থেকে টেট দুর্নীতি নিয়ে নতুন কোনও তথ্য সিবিআইয়ে হাতে আসে কিনা এখন সেটাই দেখার। অন্যদিকে টেট নিয়োগে প্রাইমারির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ লক্ষ টাকা, আপার প্রাইমারির ক্ষেত্রে সেটা ১৫ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে অনেকের নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, -‘ এই মামলায় চন্দন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে আসছে, যিনি টাকা নিয়ে বেআইনি ভাবে চাকরি দিয়েছে বলে অভিযোগ’। ওই ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ছাড়পত্রও সিবিআইকে দিয়েছেন বিচারপতি। পাশাপাশিই, এই মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকেও তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেছে আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের হ নির্দেশ, আগামী ১৫ জুন মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দিতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। এজন্যই দ্রুত তদন্তের জাল গুটিয়ে আনতে চাইছে সিবিআই । রবিবার মামলাকারীকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজাম প্যালেসে। এর আগে এসএসসির মামলাকারীদেরও ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই।রবিবার সিবিআইয়ের অফিস নিজাম প্যালেসে যান প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় মামলাকারী সৌমেন নন্দী, এদিন তাঁর সাথে ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।