সমাজমাধ্যমে দলীয় কর্মীর বিস্ফোরক অভিযোগ
দলের জেলা সভাপতি বিজেপি অফিস বিক্রি করে দিতে পারেন
খায়রুল আনাম
বোলপুর, ৪ জানুয়ারি–আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে এরাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি যখন দলীয় কর্মীদের সঙ্ঘবদ্ধভাবে লড়ার জন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রসাদ নাড্ডাকে এনে জনসভা করছে তখন, বীরভূমে দলের অভ্যন্তরীন গোলযোগ লাগামছাড়া হয়ে বাইরে এসেছে। ওই সময় বিজেপির জাতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা যেমন দলের একাংশের বিরুদ্ধে সমাজ মাধ্যমে একের পর এক অভিযোগ তুলে প্রচার করেছেন তেমনি অনুপম হাজরার বিরুদ্ধেও একের পর এক ছাপা পোস্টার পড়েছে। তাতে অনুপম হাজরাকে সেটিংবাজ, অকালকুষ্মাণ্ড বলা ছাড়াও তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিও জানানো হয়েছে। দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী রামপুরহাট ও সাঁইথিয়ায় এলে দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার বিরুদ্ধেও একাধিক পোস্টার পড়ে। এমন কী, তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে টাকা খেয়ে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে হারানোর অভিযোগও আনা হয়। বিজেপি এই পরিস্থিতির মধ্যে অনুপম হাজরাকে দেওয়া কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী তুলে নেওয়া ছাড়ারও তাঁকে দলের জাতীয় সম্পাদকের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
এবার একইভাবে বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে সোমনাথ ঘোষ নামে এক বিজেপি কর্মী সরাসরি অভিযোগ করে বলেছেন যে, সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের মতো লোকের বিজেপি দলে থাকাটা কলঙ্কের ব্যাপার। এক ব্যক্তি মন্দির করার জন্য যে জমি দান করেছিলেন, তা সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল নিজের নামে করে নিয়েছেন। বিগত পঞ্চায়েত ভোট ও বোলপুর পৌরসভা ভোটের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে টাকা নিয়ে সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল দলীয় প্রার্থী দেয়নি। আবার কোথাও প্রার্থী দিলেও মনোনয়নপত্র তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। পঞ্চায়েত ভোটের সময় মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় নানুরে তাঁর উপরে যে হামলা হয়েছিলো, সেটিও তাঁর পরিকল্পিত ছিলো বলে সোমনাথ ঘোষ উল্লেখ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন যে, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে সন্ন্যীচরণ মণ্ডল পার্টি অফিসই বিক্রি করে দেবে। সেই সথে তাঁর আরও অভিযোগ, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন বোলপুরে ভোট প্রচারে আসেন তখন বোলপুরের উপকণ্ঠে একটি অস্থায়ী হেলিপ্যাড করা হয়। সেই হেলিপ্যাড করার জন্য প্রচুর পরিমাণে ইট ব্যবহার করা হয়েছিলো। সেই ইট সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল তুলে নিয়ে গিয়ে নিজে বাড়ি করেছেন। আর দলীয় এক কর্মীর এইসব অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এইসব অভিযোগ নিয়ে সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল অবশ্য কোনও মন্তব্য না করে নিজের মোবাইলটিও বন্ধ করে দিয়েছেন।