সংশপ্তকের শারদীয়া পত্রিকা প্রকাশ,
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
তখনও করোনা জনিত লকডাউন শুরু হয়নি। তাই ধূমকেতুর মত আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাওয়ার জন্য অলস দুপুরে হঠাৎ গড়ে ওঠা কোনো সাহিত্য গ্রুপ এটা নয়। একটা বিশেষ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দমদমের এয়ারপোর্ট এলাকার বিশিষ্ট তরুণ সাহিত্য সেবক এবং পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার শোভন ব্যানার্জ্জীর হাত ধরে ২০২০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সাহিত্য জগতে পথ চলা শুরু করে 'সংশপ্তক'। যোগদান করেন একগুচ্ছ প্রথম সারির কবি-সাহিত্যিক। সবার উদ্যোগে মাত্র এক বছরের মধ্যেই ২০২১ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত হয় গোষ্ঠীর প্রথম পত্রিকা 'অগ্নিবাণ'। আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার হাজির শারদীয়া পত্রিকা। শতাধিক নবীন-প্রবীণ কবি-সাহিত্যিকের অমূল্য সৃষ্টিকে পাথেয় করে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গত ২৫ শে সেপ্টেম্বর উত্তর কলকাতার হেঁদুয়ার 'ধরভিলা'-য় শারদীয়া পত্রিকাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা সাহিত্য জগতের সুপরিচিত মুখ কবি বৈজয়ন্ত রাহা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন
কবি-সাহিত্যিক দিলীপ রায়, বিশিষ্ট প্রকাশক তথা আনন্দ প্রকাশনের কর্ণধার শ্রী নিগমানন্দ সহ আরও অনেকেই । প্রসঙ্গত আনন্দ প্রকাশনের হাত ধরে প্রতি বছর অসংখ্য কবি-সাহিত্যিকের বই প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়ে শিপ্রা কর্মকার, লেখা ঘোষ, শম্পা ঘোষ, সঞ্জয় কুমার নাগ, চিত্রা চ্যাটার্জী, সমর্পিতা রাহারা খুব খুশি।
প্রচ্ছদ সৃষ্টিতেও পত্রিকা গোষ্ঠী নতুন ভাবনার পরিচয় দিয়েছে। সাধারণত বিখ্যাত অঙ্কন শিল্পীদের আঁকা ছবি শোভা পায় পত্রিকার প্রচ্ছদে। কিন্তু এই শারদীয় পত্রিকায় সামনের পাতার প্রচ্ছদ এঁকেছে শিশুশিল্পী স্রোতস্বিনী। আর পিছনের পাতায় শোভা পাচ্ছে ন’জন শিশু শিল্পীর অপরূপ সৃষ্টি। দু’টি প্রচ্ছদই সবার প্রশংসা আদায় করে নেয়।
পত্রিকা গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় পঞ্চাশাধিক কবি-সাহিত্যিককে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। উপস্থিত নবীন-প্রবীণ কবি-সাহিত্যিকদের স্বরচিত কবিতা পাঠ, সঙ্গীত পরিবেশন এবং কাব্য সাহিত্য সম্পর্কে প্রবীণদের আলোচনায় অনুষ্ঠানটি উপভোগ্য হয়ে ওঠে। উপস্থিত কবি-সাহিত্যিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শারদীয়া পত্রিকার একটি করে কপি। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক শোভন ব্যানার্জ্জী।
চিত্রা দেবী বলেন – এধরনের সাহিত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কাব্য-সাহিত্য সম্বন্ধে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়ে। পরবর্তীকালে ভিন্ন স্বাদের সাহিত্য সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।
অন্যদিকে শোভন বাবু বলেন – দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্যচর্চা করলেও এই প্রথম নিজস্ব একটি গ্রুপ তৈরি করলাম। অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার সাহিত্যচর্চার সঙ্গীদের কাছ থেকে। মূলত তাদের সহযোগিতা ও উৎসাহের জন্যই অল্প সময়ে দুটি পত্রিকা প্রকাশ করতে পারলাম। আশা করা যায় সবার সহযোগিতায় আগামী দিনে গ্রুপটি এবং প্রকাশিত পত্রিকাগুলি আরও উচ্চমানের হবে। পত্রিকা গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে উপস্থিত কবি-সাহিত্যিকদের তিনি ধন্যবাদ জানান এবং আগামী দিনেও তাদের সহযোগিতা কামনা করেন।