গোপাল দেবনাথ,
শ্যামবাজার অঞ্চলে এক অসহায় বিধবার সম্পত্তি জোর করে দখল করা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় ওই বাড়ির দোকানঘরের এক ভাড়াটিয়া ও ওই মহিলার ননদের নাম উঠে এসেছে। ননদ সম্পত্তির কিয়দাংশের মালিক হওয়া সত্ত্বেও জোর করে বেশিরভাগ অংশের মালিক নিঃসন্তান ষাটোর্ধ পৃথা নন্দীকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে চাইছে। এই ঘটনায় স্থানীয় শ্যামপুকুর থানা ও কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সবটা জানা সত্ত্বেও নীরব। নীরবতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
ঘটনাটি ৯৯ এ বিধান সরণীর। পৃথাদেবীর স্বামী অশোক নন্দী গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন। অল্প কিছুদিন পরেই একতলার একটি দোকান ঘরের ভাড়াটিয়া সুশান্ত সুতার ও ননদ অন্নপূর্ণা গোটা বাড়ির দখল নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। পৃথাদেবীর মন্মথ কেবিন নামে ওই বাড়িতে একটি রেঁস্তোরা ছিল। সেটিও জোর করে দখল করে নেওয়া হয়। ওই বিধবা মহিলার রান্নাঘর, বাথরুম ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ওই দুই ব্যক্তির মদতপুষ্ট কিছু লোক পৃথা নন্দীকে গত ১৫ মার্চ প্রবল মারধর করে। তাঁর ব্যাঙ্কের বই, স্থায়ী আমানতের কাগজ কেড়ে নেওয়া হয়।
পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে যাচ্ছে দেখে ওই মহিলা প্রথমবার ২৬ ফেব্রুয়ারিতে শ্যামপুকুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। গোটা বাড়ি দখল করে বেআইনি নির্মাণ চালানোর অভিযোগ জানিয়ে কলকাতা পুরসভাকে চিঠি দেওয়া হয় ২৬ ফেব্রুয়ারিতেই। পুরসভাও এই নিয়ে কোনও আগ্রহ দেখায়নি। পরে স্থানীয় পুরপিতা অতীন ঘোষ ঘটনাস্থলে এলেও বিষয়টি গ্রাহ্যের মধ্যে না এনে বেআইনি নির্মাণকারীকেই প্রশ্রয় দিয়ে এলাকা ছাড়েন। ফলে বেআইনি নির্মাণ চলতেই থাকে। অভিযোগকারীকে ইতিমধ্যে কয়েকবার প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
উপায়ন্তর না দেখে ওই অসহায় মহিলা সিটি সিভিল ও ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বারস্থ হন। দুই আদালতই বিষয়টি জেনে আলাদা তিনটি কাজ বন্ধের সাময়িক স্থগিতাদেশ দেয়। প্রথম স্থগিতাদেশ জারি করা হয় গত ২ মার্চ। পৃথাদেবীর অভিযোগ, আদালতের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণ চলছে। চলছে হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন। তাঁর আরও অভিযোগ, শাসকদলের বড় নেতা এ কাজে মদত দেওয়ায় পুলিশ ও পুরসভা নিস্ক্রিয় রয়েছে। ইতিমধ্যেই সমস্ত বিষয়টি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু এখনও কোনও পক্ষের জবাব আসেনি।