Spread the love

শিব নারদ সংবাদ

       * দিলীপ রঞ্জন ভাদুড়ী।

গতকাল কোন সকালে নীলকন্ঠ পাখি কৈলাসে পৌঁছে গিয়ে দেবাদিদেব মহেশ্বর কে
সংবাদ খবর দিয়েছে,” মা দু দফায়
বাড়ি ফিরবেন”।মহাদেব বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। কেন
এক দফায় নয়? নীল কন্ঠপাখি বলল”প্রভু আমি এত শত জানি না।বেশ কয় বছর ধরেই তো আমাকে ডবল ডিউটি করতে হয়।”। “একটি হয় দর্পণে বিসর্জন,
সেটা আজ। আর একটা কয়েক দিন পরে,সেদিন আমি এসে আবার খবর দিয়ে যাব।” নন্দি ভিরিঙ্গি শুনে ই বলল” লে হালুয়া।
কয়েক বছর ধরে চলছে,আর আমরা জানিই না”। মহাদেব বললেন” সারা দিন রাত নেশা করিস,কোন কিছু খেয়াল রাখিস না,আমার হয়েছে যত জ্বালা”। ঠিক সন্ধ্যায় মা ছেলে পুলে নিয়ে
পতি গৃহে পৌঁছলেন। মহাদেব বললেন “দেবী তোমার বেশির ভাগ
ব্যাচ দেখছি ,ফেরেনি!তাঁরা সব কোথায়।মা বললেন ‘ চিন্তা করনা,
সবাই ফিরবে।তবে বাংলা থেকে ফাইনাল ডেট ,সাত তারিখে এবার। কয়েক বছর তো আমি বাংলা থেকে এভাবেই দুই ব্যাচে ফিরি। কিন্তু, আজ একটা দুঃসংবাদ আছে।মহাদেবের চমকে উঠে বললেন “কি”? উত্তর পেলেন
“মহিষাসুর কিছুতেই ফিরবে না’।বলেছে শুক্রবার ফিরবে”।মহাদেব নিশ্ছিন্ত
হলেন। মা বললেন “আমি কিন্তু নিশ্ছিত নই।ও বাংলা কে ভাল বেশে ফেলেছে।,না ফেরা পর্যন্ত বিশ্বাস নেই।”
মহাদেব দেখলেন নারদ কে
ডাকতেই হবে!ডাক পেয়ে মহামুনি
নারদ এলেন।”নারায়ণ,নারায়ণ” বলে হাত জোড় করে হাজির হলেন। ,বিশ্বনাথ বললেন “একটি বার মর্তে যাও, মহিষাসুরের মতলব টি বুঝে এসো”।
হাত জোড় করে বললেন ” স্যার বলেই থুড়ি বললেন, প্রভু মাফ
করবেন,আমার বংশ ধর রা মর্তে আছে,এই সামান্য খবর ওঁদের কাছে কিছুই না।”মহাদেব কে তাঁরা,
জানতে চাইলেন। ওঁরা মাস মিডিয়া,উত্তর পেলেন। “এ ছাড়াও আমার খুব আপত্তি আছে। বাংলায় চিরকাল খুব ঝগড়া ঝাঁটি।
বেকার বেশি।রকবাজ বেশি। ঝগড়া শুনেই দিন রাত কাটায়। সেই সময় আমার নাম ধরে ” নারদ, নারদ ” বলে প্যাক দেয়।
ঝগড়া নাকি বেড়ে যায়। সরকার
আমার জন্মদিনে ছুটিও দেয় না।
আমি ছিলাম গন্ধর্ব ,আমার প্রমোশন হয়ে আমি দেবতা হয়েছি।
তাও মর্তে সম্মান কোথায়? এ ছাড়াও আমার যান ঢেকি,বাংলায়
এটার এন্টিক ভ্যালু অনেক। যদি সংরক্ষণ করে দেয়,তাহলে তো আর ফিরতে পারব না”। মহাদেব বললেন “তা এসব কথা ইন্দ্ররাজ কে জানিয়েছ” ? জানিয়ে লাভ হবে না। মর্তে এখন নাসা চন্দ্র,মঙ্গল গ্রহে রোজ আসছে যাচ্ছে, এখন তো চন্দ্রে মাটি কেনা বেচা চলছে।
মঙ্গল গ্রহ মেপে দেখছে। চন্দ্র ও
মঙ্গল গ্রহ দখল হলো বলে।
এসব শুনে মহাদেবের মাথা
বোঁ বোঁ করে করে ঘুরতে লাগল।
এবার মহামুনি নারদ বললেন ” শান্ত হন প্রভু ,সুমন ও কুণালের সাথে কানেক্ট করতে পেরেছি।এখনই খবর দেব।” নারদ ” প্রথমে
কুনাল দা ও পরে সুমন দা র সাথে কথা
বলে নিলেন। তারপর বললেন ” প্রভু মহিষাসুর ফিরছে না। কনফার্ম।'”
মহাদেব এবার বললেন ” মা কাত্যায়নি রূপে ওকে বধ করেছিলেন।তারপর ,থেকে তো ওর একটাই ডিউটি প্রতি বছর মায়ের সাথে বাপের যাওয়া আর আসা।ও কি করে প্রাণ ফিরে পেল?” মহামুনি নারদ জানালেন
” বজরংবলি সেই ত্রেতা যুগে বিসল্য করনি বিদ্যা দিয়ে শিখিয়ে
গেছে ,কি করে মৃত মানুষ প্রাণ ফিরে পায়। তারপর, সাধনা ঔষধলায় “মৃত সঞ্জীবনী ” দাওয়াই
আবিস্কার করেছে। এখন রামদেব বাবা, যা সব জড়ি বুটি বেড় করেছে, অতুলনীয়। তাছাড়া মহিষাসুরের বংশ পরিচয় দেখুন।
তিনি কশ্যপ মুনির নাতি। কৃষ্ণ বরাহ অবতার হয়ে মা ভুমার গর্ভে
ওকে মর্তে এনেছিলেন। রক্তবীজ রা তো ওঁর বংশোদ্ভূত।নারায়ণ থাকতে ওঁর কেউ কিছু করতে পারবে! ওঁরা সবাই আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। নরকাসুর ওঁকে বিপথে চালিত করে রাজ্য কেড়ে নিয়েছিল।নরকাসুর বড্ড বার বেড়েছিল ও স্বর্গে গিয়ে মা অদিতির কর্ণ কুন্তল ও ৬০০০ সুন্দরী কে অপহরণ করে মর্তে নিয়ে গিয়েছিল। ইন্দ্ররাজ তো ভয়ে
পালিয়ে বেঁচেছিল। পরে ভূমা দেবী
ও শ্রীকৃষ্ণ র যৌথ প্রয়াসে নরকাসুর কে বধ হয়।
গতকাল রামলীলা ময়দানে রাম এসে আবার রাবন কে তীর বিদ্ধ করে ,মর্ত বাসী রাবনের মৃত্যু
বার্ষিকী পালন করে খুব আনন্দ করেছে। কিন্তু, প্রতি বছর এটা করেও রাবন কে মারতে পারেনি।
রাবনের ত্রেতা যুগের চিতা এখনো নেভেনি। রাবন ,মহিষাসুর ও তাঁদের বংশ ধর রা সবাই বহাল
তবিয়তে আছে। তবে দুভাগে থাকে।” এই পর্যন্ত বলে মহামুনি নারদ থামল। এদিকে ভোলা মহেশ্বরের ইন্টারেস্ট বেড়ে গেল।
তিনি নারদ কে বললেন ‘তা এঁরা কে কোথায় থাকছে?’ যতদূর
জানি রাবন কুল দিল্লিতে,নরকসুররা বাংলায়। দিল্লি
বাংলাকে সহ্য করতে পারেনা বাংলা দিল্লিকে দেখতে পারে না।’
মহাদেব এবার চেটে গেলেন।
বললেন ” পুলিশ গুলো কি করছে”? নারদ বললেন “,মনে কিছু
করবেন না। মা সাড়া বছর তাড়াপীঠে বাস করেন,আপনি তারকেশ্বরে,মা কালি থাকেন কালীঘাটে”। আমার উত্তর পুরুষ সুমন ও কুনাল তো কলকাতায় থাকে।ওঁরা দুজনেই সাংবাদিক ও শ্রেষ্ঠ বাচিক শিল্পী। দুজনেই খুব
ভাল।আমার ওঁদের জন্য গর্ব হয়।
আপনি বা মা দুজনকে আলাদা আলাদা এক দিনেই ডেকে জেনে নিন না। এক সাথে ডাকবেন না। তর্ক বেধে গেলে আর থামতেই পারবেন না। আমাকে আর বিড়ম্বনার মধ্যে আনবেন না।
পুলিশদের ব্যাপার ওঁরাই বলে দেবে। পুলিশের নানা গ্রূপ।
সি আই ডি ,এস টি এফ ,থানা পুলিশ, সি বি আই, এসব নানা শ্রেণীর। এঁদের বড্ড টানাটানি। পুলিশ কাজ করলেও দোষ না করলেও দোষ। তবে সি বি আই,
ইডি এসব জানতে হলে আমার মিডিয়া পার্টনার “আজ তক” দিল্লিতে আছে। ও দিল্লির ব্যাপারে ভাল বলতে পারবে”।
এই বলে অনুমতি নিয়ে মহামুনি নারদ ঢেঁকিতে চেপে বৈকুণ্ঠে রওনা হলেন।
।। ওঁ তৎ সৎ ওঁ।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *