বৈদূর্য ঘোষাল (আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্ট),
অনাত্মীয়ার অভূতপূর্ব সাফল্যের পর লেখিকা শুচিস্মিতা ধরের আর একটি মাস্টারপিস শুধু সময়ের অপেক্ষা –
পৃথ্বীশ মউ এর ঘরে ঢুকে নিজের পকেট থেকে একটা ছোট্ট কাচের vial বের করে তার মধ্যে রাখা আজ সকালের পুজোর শান্তির জল হাতে নিয়ে বললেন,
“ওঁ ভদ্রং কর্ণেভিং শৃণুয়াম দেবাঃ।
ভদ্রং পশ্যেমাক্ষভির্য জত্রাঃ
স্থিরৈঃ অঙ্গৈঃ তুষ্টু বাংসঃ তনুহভিঃ।
ব্যশেম দেবহিতং যৎ আয়ুঃ।
ওঁ স্বস্তি নো ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ।
স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্বদেবাঃ।
স্বস্তি নোস্তার্ক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ।
স্বস্তি নো বৃহস্পতির্দধাতু
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ ।।”
“আঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁআঁ…”
জল টা ছিটানো মাত্র একটা গগনভেদী চিৎকার হলো সিলিং এর থেকে।
উলটো হয়ে সিলিং এ আটকে রয়েছে মোহনা,বা মউ, বা তারই মতন কেউ।
খোলা চুল, চোখের মণি নেই, মুখে অসম্ভব ক্রোধ।
মন্ত্রোচ্চারণ থামালেন না পৃথ্বীশ,
“ওঁ সহনাববতু ,সহনৌ ভুনক্তু ,সহ বীর্যং করবাবহৈ।
তেজস্বীনাবধীতমস্তু , মা বিদ্বিষাবহৈ ।।
ওঁ শান্তি , শান্তি, শান্তি হি..
মউ এর মুখ দিয়ে গলগল করে কালো আঠালো পদার্থ বেরিয়ে এসে মেঝেয় পড়তে থাকে। সে নিজেও অচেতন হয়ে ধপ করে নিচে পরে। কপাল ফেটে রক্ত বেরোতে থাকে।
এই ঘটনা চোখের সামনে দেখে অনন্যা বাক্যহারা ও চূড়ান্ত আতংকিত হয়ে জড়বস্তুর মতো দাঁড়িয়ে ছিল।
পৃথ্বীশ তাকে হাত লাগাতে বললেন।
দুজনে মিলে ধরাধরি করে অচেতন মোহনা কে নিয়ে বিছানায় ফেলে তার দুই হাত ও পা খাটের পায়ার সাথে বাঁধলেন।
সাথে সাথে চোখ খুলে গেল মোহনার। মণিবিহীন সাদা চোখ, হিসহিসে কন্ঠস্বরে সে বলে উঠল,
“বাঁচাতে পারবি না… আর বাঁচাতে গেলে মরবি। পালা, পালিয়ে যা…
“মালঞ্চ…” গমগম করে উঠল পৃথ্বীশের কন্ঠস্বর।
“আমি জানি তোমার সাথে যে অন্যায় হয়েছে তার কোনো ক্ষমা নেই।
কিন্তু তুমি এখন আর এই দুনিয়ার নও মা। যা হয়েছে ভুলে যাও। এদের ক্ষমা করে দিয়ে নিজের দুনিয়ায়…”
“চোওওপ… কোত্থাও যাব না আমি, তুই যা….বেরো এখান থেকে”
শুরু হলো স্বস্ত্যয়ন।
ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রে। বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূয বিশ্ববেদাঃ । স্বস্তি নস্তাক্ষোইরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নে বৃহস্পতির্গধাতু ॥ ওঁ স্বস্তি, ওঁ স্বস্তি, ওঁ স্বস্তি”
সাথে গঙ্গাজলের ছিটে। প্রত্যেক টা ছিটের সাথে মউ এর তীব্র মৃত্যুযন্ত্রনার চিৎকারে কেঁপে উঠতে লাগল ফ্ল্যাট
“ওঁ স্বস্তি নো মিমীতা মশ্বিন ভগঃ স্বস্তি দেবাদিতি রণব্বশ: ; স্বস্তি পূব অক্সরে দধাতু নঃ স্বাস্ত স্তাব পৃথিবী স্বচেতন।। |
ওঁ শ্বস্তয়ে মুপক্ৰবামহৈ সোমং স্বস্তি ভুবনন্ত যম্পতিঃ । বৃহস্পতিঃ সৰ্ব্বগণং স্বস্তয়ে স্বস্তর আদিভ্যাসে ভবম্ভনঃ।
ওঁ ৰিখদেব নে আস্ত স্বস্তয়ে বৈশ্বানরে বস্থরগ্নিঃ স্বস্তরে। দেবী অভবন্তু ঋভবঃ স্বস্তয়ে স্বস্তি নো রুদ্রঃ পাত্বংহলঃ ।
ওঁ স্বস্তি মিত্রাধরুণে স্বস্তিপথ্যে য়েবতি । ওঁ স্বতি ন ইন্দ্রশাগ্নিশ্চ স্বস্তি নে আদি…”
“ইয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া…”
চিৎকার টা ক্রমশ হাহাকারে পৌঁছে যেতে ঠাস করে ঘরের উত্তর দিকের জানালা টা খুলে গেল।
মউ ও নিশ্চুপ হয়ে লুটিয়ে পড়ল বিছানায়।
ভূত-ভুতুম ও বিভা পাবলিকেশন এর যৌথ উদ্যোগে, আগামী জানুয়ারী তে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় দুটি উপন্যাস নিয়ে আসছে “স্বস্ত্যয়ন” , সাথে একই মলাটে থাকছে স্বস্ত্যয়নের সিক্যুয়েল বা দ্বিতীয়াংশ , “পূর্ণাৎ”।