Spread the love

খায়রুল আনাম,

সময়ের প্রেক্ষিতে আমাদের যে বামনাকৃতি ভাবের প্রকাশ, সেখানে লিটল ম্যাগাজিন বা ছোট পত্রিকার স্থানটাও অনেক ক্ষেত্রে সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। আবার কমে যাচ্ছে পাঠকের পাঠক্ষুধাও। কিন্তু এটি এমন এক ক্ষুধা যা একবার কারও মধ্যে প্রবেশ করলে, সেই ক্ষুধার নিবৃত্তি হয়না। এই ক্ষুধার অন্যতম আধার হয়ে বীরভূমের বোলপুরের লায়েকবাজার থেকে প্রকাশিত হচ্ছে ” নন্দিনী অন্যভাবনা” সাহিত্য পত্রিকাটি। শক্তপোক্ত পিলারের মতো স্পর্ধিত ভাবনায় এক পিলসুজ আলোকবর্তিকা হয়ে শান্তিনিকেতনের রতনপল্লিতে অনাড়ম্বর অথচ আন্তরিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হলো “নন্দিনী অন্যভাবনা” পত্রিকার ঊনবিংশ বর্ষের ত্রয়োদশ সংখ্যা পৌষ-১৪২৮। ঈষদ হলুদাভ হ্যাণ্ডমেট পেপারের হিরণ মিত্র-র প্রচ্ছদের তিনশত টাকা মূল্যের স্মল পাইকা টাইপের ২৬৮ পৃষ্ঠার পত্রিকাটি মুঠোয় পুরে নেওয়া গেল অক্ষর উষ্ণতা। পত্রিকার এই সংখ্যার লেখায় বিষয় নির্বাচনে সম্পাদক যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। যা এই সময় লিটল ম্যাগাজিনের ক্ষেত্রে বেশ বিরল। প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিতাভ নাগ অনকে অকথিত কথায় যেমন আলোকপাত করেছেন তেমনি, প্রমথ চৌধুরীর লেখা পুনর্মুদ্রণে-ভারতবর্ষ সভ্য কি না, এই ভাবনাও আমাদের জারিত করে। কুমার রাণা, সুজাত ভদ্র এবং সাবির আহমেদ বেশকিছু বিষয়কে আঁচড় কেটে সামনে এনেছেন। স্টিফেন হকিং ও তাঁর অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করেছেন চিরঞ্জীব শূর। এই সময়কালের অন্যতম আলোচ্য বিষয় করোনা ভাইরাস: রুগ্ননীতি ও মহামারির বিজ্ঞান নিয়ে আলোকপাত করেছেন তুষার চক্রবর্তী। শান্তিনিকেতনের অনাদৃত মানুষগুলোর মুখ কলম-শিল্পীর আঁচড়ে তুলে ধরে অনালোকিত আলোর দিকে টেনে নিয়ে গিয়ে অনেক মুখকে চিতনে সাহায্য করেছেন। কবিতায় তৈমুর খান, অতনু বর্মন, তাপসী ঘোষ, ফাল্গুনী ভট্টাচার্য, নিখিলেশ পাল, শিলাদিত্য পান, গোপীকান্ত চৌধুরী বেশ সাবলীল। স্মৃতিকথা, পরিবেশ, গল্প৷ গ্রন্থ আলোচনা যেমন স্থান পেয়েছে তেমনি, অন্যভাবনা বক্তৃত্বা এবং বেহাল খাতার পাতা থেকেও পাওয়া গিয়েছে ভিন্নতর ভাবনার খোরাক। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যামিনী রায়ের রঙিন ছবি পত্রিকার মানকে অধীকতর সমৃদ্ধ করেছে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *