মহানগরে বেশকিছু বেআইনী নির্মাণ ভাঙতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বেআইনী নির্মাণ নিয়ে ফের কড়া দাওয়াই দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার কলকাতার ৮ টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, -‘ বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে বেআইনি ভাবে তৈরি করা ওই সব বাড়ির বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের পরিষেবা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে’। আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশ এবং সিইএসসিকে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে । আদালতের নির্দেশ মানা হয়েছে, এই মর্মে ওই দিন রিপোর্ট দিতে হবে পুরসভাকে বলে জানা গেছে ।উত্তর কলকাতা-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আবেদনে বলা হয়েছে, -‘কলকাতা পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই ওই সব নির্মাণ করা হয়েছে। তার পরেও পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করেনি’। এর আগে এই সংক্রান্ত মামলায় টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। মহানগরে কতগুলি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে? তা চিহ্নিতকরণের কাজ করে টাস্ক ফোর্স। অভিযোগ, উত্তর কলকাতার কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের ৬ ‘টি, রাজা রাজনারায়ণ স্ট্রিট এবং গিরিশ বিদ্যারত্ন লেনের ১ টি করে নির্মাণ নিয়ম না মেনে তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের একটি বাড়ি ভাঙার উপর সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে।শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, ‘পুলিশের সাহায্য নিয়ে ওই সব বাড়িতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করবে পুরসভা। উচ্ছেদ সম্পূর্ণ হলে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করতে হবে।আদালতের এই নির্দেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশ ও সিইএসসি-র উপর। উচ্চ আদালতের নির্দেশ কতদূর বাস্তবায়িত করা হয়েছে? তার রিপোর্ট আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করতে হবে । কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় আবেদনকারীদের দাবি কলকাতা পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই বেআইনি নির্মাণ হয়েছে । কেশব চন্দ্র স্ট্রিটের ৬ টি সম্পত্তি, রাজা রাজনারায়ণ স্ট্রিটের ১ টি সম্পত্তি, গিরিশ বিদ্যারত্ন লেনের ১ টি সম্পত্তির উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে -‘ কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ সন্মিলিত ভাবে একটি টাস্কফোর্স গঠন করবে। ওই টাস্কফোর্স কলকাতা শহরে কতগুলো বেআইনি নির্মাণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখবে এবং ওই নির্মাণে বসবাসকারী বাসিন্দাদের একটি রুপরেখা তৈরি করবে। বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে’।এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের এক বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। ২০২৪-এর গত ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের ১৭০ নম্বরের সম্পত্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করলেও বাকি গুলোর ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে।কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলার শুক্রবার শুনানি চলাকালীন কলকাতা পুরসভার আইনজীবী সওয়াল-জবাবে জানান -‘ বেআইনি নির্মান থেকে বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে গেলে পুলিশি সহায়তার প্রয়োজন’। এরপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করে যে -‘কলকাতার বেআইনি নির্মাণ গুলিতে অবিলম্বে পুরসভা পানীয় জলের পরিষেবা ও সিইএসসির বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করতে হবে।অবিলম্বে ওই বেআইনি বাড়ি/সম্পত্তিতে বাসবাসকারীদের কলকাতা পুরসভা উচ্ছেদ করবে। পুলিশ তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে। উচ্ছেদের পর নির্মাণ অবিলম্বে ভেঙে ফেলতে হবে।আদালতের এই নির্দেশ উপযুক্ত ভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা কলকাতা পুরসভা পুলিশ এবং সিইএসসি-কে নজরদারি চালাবে।আদালতের এই নির্দেশের বাস্তবায়নের কার্যকারিতা ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে।১৭০ নং কেশব চন্দ্র স্ট্রিটের সম্পত্তি ভাঙা হবে কিনা?সেই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশের উপর নির্ভর করবে।আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারিতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।