মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অভিনব ভাবনায় মন ছুঁয়েছে এলাকার মানুষের, প্রশংসা করলেন বিডিও।
আমিরুল ইসলাম
স্কুলের গেটের মুখেই রয়েছে কাঁচের ঢাকনা দেওয়া দুটি দেওয়াল আলমারি। পাশে উল্লেখ”শুধুই আপনার জন্য। মন চাইলে দিয়ে যান। মন চাইলে নিয়ে যান।”
পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ এক অভিনব ভাবনা। স্কুলের সামনেই রাখা হয়েছে আলমারি ভর্তি পোশাক। যাদের উপযুক্ত পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। তাদের জন্য সর্বক্ষণ উন্মুক্ত এই আলমারি। নিজের প্রয়োজন ও পছন্দমতো পোশাক সেইসব মানুষ নিয়ে যেতে পারেন। আবার অনেকের ঘরেই রয়েছে অতিরিক্ত অব্যবহৃত পোশাক। তারা এই আলমারিতে পোশাক রেখে যেতে পারেন।
মঙ্গলকোটের খুদরুন থেকে শ্যামবাজার যাওয়ার সড়কপথের ধারেই মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের গেটের মুখে বসানো হয়েছে দুটি দেওয়াল আলমারি। আর এই আলমারিই এখন প্রত্যন্ত গ্রামের বহু দুঃস্থ মানুষের মুখে হাঁসি ফোটাচ্ছে।দুস্থ মানুষদের মধ্যে যারাই প্রয়োজন মনে করবেন তারাই এই আলমারি খুলে পছন্দের পোশাক নিয়ে যেতে পারছেন। এর জন্য না দিতে হচ্ছে কোনও মূল্য, না নিতে হচ্ছে কারও অনুমতি। তিনমাস ধরেই এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্কুলের এমন অভিনব ও মহান উদ্যোগ সবার প্রশংসা কুড়াচ্ছে। অনেক সহৃদয় মানুষ রেখে যাচ্ছেন জামাকাপড়। যাতে সেগুলি কারও না কারও কাজে লাগে।
মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক সুব্রত সাহা বলেন,” এমনিতেই আমাদের স্কুলে সারাবছর বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড নেওয়া হয়। স্কুলের সহশিক্ষক শিক্ষিকাদের ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষ হেঁটে যান যাদের পড়নে পোশাক ঠিকমতো থাকে না। আবার অনেকের বাড়িতে অব্যবহৃত অতিরিক্ত পোশাক পড়েই থাকে। সেগুলি বহু দুস্থ মানুষের উপকারে আসতে পারে।”
মঙ্গলকোট ব্লক আধিকারিক জগদীশচন্দ্র বারুই জানান যে প্রধান শিক্ষক যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার সত্যিই প্রশংসনীয়। এইভাবে সকলেই যদি এগিয়ে আসে তাহলে সমাজ আরো এগিয়ে যাবে।
স্কুলের শিক্ষকরা জানান, এই জন্যই আলমারি দুটি স্কুলের বাইরের দিকে করা হয়েছে। যাতে কেউ দিনের বেলায় সবার সামনে লজ্জাবোধ করলে রাতের দিকেও নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে নিতে পারেন।