ব্লু স্টার লঞ্চ করল ১০০-র বেশি সাশ্রয়কর এবং প্রিমিয়াম মডেলের রুম এয়ার কন্ডিশনারের নতুন সম্ভার
কলকাতা, মার্চ ১৪, ২০২৪: আসন্ন গ্রীষ্মকালের জন্যে ব্লু স্টার লিমিটেড আজ প্রকাশ করল রুম এসির নতুন সার্বিক সম্ভার। এর মধ্যে আছে একটা ‘শ্রেণির সেরা সাশ্রয়কর’ সম্ভার এবং একটা ‘ফ্ল্যাগশিপ প্রিমিয়াম’ সম্ভার। সব মিলিয়ে কোম্পানি ইনভার্টার, ফিক্সড স্পিড ও উইন্ডো এসির পুরো স্পেকট্রাম জুড়ে এবং সবরকম দামের ১০০-র বেশি মডেল লঞ্চ করেছে সব ধরনের ক্রেতার জন্যে।
রুম এসির বাজারে উল্লেখযোগ্য চাহিদা বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। এর কারণ খরচ করার মত টাকা হাতে আছে এরকম ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং ঘরে এসি লাগানো বিলাস থেকে ক্রমশ প্রয়োজনে পরিণত হওয়া। বিশেষ করে টিয়ার ২, ৩ ও ৪ বাজারের প্রথমবারের ক্রেতাদের চাহিদা কোম্পানি দেখতে পাচ্ছে। সঙ্গে আছে এসি বদলানোর বাজারের চাহিদা।
ব্লু স্টার এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করার জন্যে একগুচ্ছ প্রোডাক্ট লঞ্চ করেছে। নিজেদের উৎপাদন, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং উদ্ভাবন ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নতুন, স্বতন্ত্র এবং শ্রেণির সেরা এসি বানানো হয়েছে।
২০২৪ সালের জন্যে এয়ার কন্ডিশনারের নতুন সম্ভার
কোম্পানি ইনভার্টার স্প্লিট এসি সেগমেন্টে তিনটে বিভাগ লঞ্চ করেছে। এগুলোর মধ্যে আছে ২-স্টার, ৩-স্টার ও ৫-স্টার বিকল্পে ফ্ল্যাগশিপ, প্রিমিয়াম ও সাশ্রয়কর সম্ভার। এগুলো পাওয়া যাচ্ছে 0.8 TR থেকে 2.2 TR পর্যন্ত নানা কুলিং ক্ষমতায় আকর্ষণীয় দামে, শুরু ২৯,৯৯০ টাকা থেকে।
নতুন লঞ্চ হওয়া এসিগুলোতে নানারকমের ক্রেতাবান্ধব ফিচার রয়েছে। তার মধ্যে পড়ে ‘AI Pro’ নামে এক নতুন উদ্ভাবনীমূলক ফিচার। ‘AI Pro’ হল একটা জটিল ও বুদ্ধিমান অ্যালগোরিদম যা নানারকম মাপকাঠি বুঝে নিতে পারে এবং সেই অনুযায়ী অদলবদল ঘটিয়ে সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য দেয়। উপরন্তু এর মধ্যে দ্রুত ঠান্ডা করার জন্যে ‘Turbo Cool’-এর মত ফিচার রয়েছে; আছে ‘Convertible 6-in-1 cooling’, যাতে ক্রেতারা ঠান্ডা করার ক্ষমতাকে বাড়াতে বা কমাতে পারেন; আছে IDU এবং ODU, দুটোর জন্যেই ন্যানো ব্লুপ্রোটেক্ট টেকনোলজি ও হাইড্রোফিলিক ‘ব্লু ফিন’ কোটিং। এগুলো যথাক্রমে কয়েলের ক্ষয় ও লিকেজ আটকায় এবং এসির আয়ু বাড়ায়। আরও কিছু অনন্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে DigiQ পেন্টা সেন্সর যা অতুলনীয় নিখুঁত এবং নির্ভরযোগ্য; সর্বত্র একরকম কুলিংয়ের জন্যে ৪-ওয়ে সুইং; দ্রুত ও কার্যকরভাবে ঠান্ডা করার জন্যে উঁচু মানের ঠান্ডা করার কর্মদক্ষতা; প্রত্যেক ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা স্থির করার জন্যে প্রিসিশন কুলিং প্রযুক্তি এবং দূষণমুক্ত বাতাসের জন্যে অ্যাকটিভেটেড কার্বন সমেত একটা PM2.5 ফিল্টার। সমস্ত ব্লু স্টার ইনভার্টার এসি হল স্মার্ট রেডি। একটা আলাদা স্মার্ট মডিউল যোগ করেই এগুলোকে স্মার্ট এসিতে পরিণত করা যায়। ব্লু স্টারের ইনভার্টার এসিগুলোর আরেকটা জরুরি দিক হল, এগুলোতে বিস্তৃত অপারেটিং ভোল্ট রেঞ্জ আছে। ফলে এক্সটার্নাল ভোল্টেজ স্টেবিলাইজারের দরকার হয় না।
ফ্ল্যাগশিপ সম্ভার
কোম্পানি একটা সমীহ করার মত ফ্ল্যাগশিপ মডেলের সম্ভার লঞ্চ করেছে, যার মধ্যে আছে ‘Super Energy-Efficient AC’, ‘Heavy-Duty ACs,’ ‘Smart Wi-Fi ACs,’ ‘Hot & Cold ACs’ ও ‘ACs with Anti-Virus Technology’। এছাড়াও ব্লু স্টার তার উত্তরাধিকার স্মরণ করাতে ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটা বিশেষ সংস্করণের এসিও লঞ্চ করেছে। সেই মডেল সর্বাঙ্গীণ প্রযুক্তিতে ঠাসা এবং তাতে একাধিক উদ্ভাবনীমূলক ফিচারও রয়েছে। ফলে সেটা হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে উন্নত এয়ার কন্ডিশনার।
ব্লুস্টারের ‘Super Energy-Efficient ACs’-তে আছে এক অনন্য ডায়নামিক ড্রাইভ টেকনোলজি, যাতে হাই এয়ারফ্লো ভলিউম সরবরাহ করে যতদূর সম্ভব ঠান্ডা করার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সাশ্রয় বর্ধিত হয়। এর ফলে 1 TR ইনভার্টার স্প্লিট এসি 6.25 ISEER অর্জন করে, যা ৩-স্টার ইনভার্টার এসির চেয়ে ৬৪% বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী।
প্রতিবছর চরম গ্রীষ্মকালে সারা ভারতে তাপমাত্রার সমসত্ত্ব বৃদ্ধি দেখা যায়। কোম্পানির সম্ভারের শীর্ষস্থানীয় ‘Heavy-Duty ACs’ ডিজাইন করা হয়েছে উন্নততর নির্দেশ দিয়ে। এগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও দ্রুততর কুলিং অ স্বাচ্ছন্দ্য জোগাতে পারে। এই এসিগুলোতে ৫৫ ফুট পর্যন্ত এয়ার থ্রো থাকে এবং ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও ১০০% ঠান্ডা করার ক্ষমতা রাখে।
কোম্পানি বেজোড় ‘Smart Wi-Fi ACs,’-ও লঞ্চ করেছে। এগুলোতে ‘কাস্টমাইজড স্লীপ’-এর মত অনন্য ও স্মার্ট ফিচারও রয়েছে, যাতে তাপমাত্রা ফ্যানের গতি, কুল/ফ্যান মোড প্রিসেট করা যায় এবং ১২ ঘন্টা নির্বিঘ্নে ঘুমোবার জন্যে এসি প্রতি ঘন্টায় সুইচ অন/অফ করা যায়। ভয়েস কমান্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্রেতারা অ্যামাজন অ্যালেক্সা বা গুগল হোমের মত স্মার্ট ডিভাইসগুলোর মাধ্যমে নিজেদের এসি চালাতে পারেন, ইংরিজি অথবা হিন্দিতে ভয়েস কমান্ড দিয়ে।
‘Hot & Cold ACs’ ডিজাইন করা হয়েছে সারাবছর স্বাচ্ছন্দ্য জোগাতে। ব্লু স্টার এমন একটা মডেল তৈরি করেছে যা বাইরের তাপমাত্রা -১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে গেলেও কাজ করতে পারে। এই মডেল তৈরি করা হয়েছে নির্দিষ্টভাবে শ্রীনগরের মত বাজারের জন্যে। আরেকটা সম্ভার তৈরি করা হয়েছে যার এসিগুলো বাইরের তাপমাত্রা -২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও কাজ করতে পারে দেশের বাকি জায়গায়, যেখানে খুব ঠান্ডা পড়ে।
শেষত, কোম্পানির নতুন সম্ভার যা স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বাস্থ্যের সমন্বয় ঘটিয়েছে, অর্থাৎ ‘ACs with Anti-Virus Technology’। এটা কার্যকরীভাবে ক্ষতিকর জীবাণু এবং পদার্থের কণাগুলোকে ফিল্টার করতে পারে। ক্রেতারা বিশেষ করে শীতকালে এই এসিগুলোকে এয়ার পিউরিফায়ার হিসাবেও ব্যবহার করতে পারেন।
ক্রেতাদের সাধ্যমত দামেও ব্যতিক্রমী ঠান্ডা জোগানো ছাড়াও ব্লু স্টারের এয়ার কন্ডিশনার তার গুণমান, নির্ভরযোগ্যতা এবং টেকসই হওয়ার জন্যে প্রসিদ্ধ। কোম্পানি ইনভার্টার কম্প্রেসরে আজীবন ওয়ারেন্টি দেয়, PCB-তে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি এবং নিজের প্রোডাক্টগুলোর জন্যে সহজ ফাইন্যান্সিং বিকল্প।
২০১১ সালে আবাসিক এসি সেগমেন্টে কোম্পানি প্রবেশ করার পর থেকে ব্লু স্টার এই সেগমেন্টে ক্রমশ শক্তি বাড়িয়েছে, বছরের পর বছর বাকি শিল্পক্ষেত্রের চেয়ে ভাল পারফরম্যান্স করেছে। কোম্পানির লক্ষ্য ২০২৬ আর্থিক বর্ষের মধ্যে রুম এয়ার কন্ডিশনার সেগমেন্টে বাজারের ১৫% দখল করা।
উৎপাদনের আওতা বাড়ানো
নিজের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন ব্লু স্টার ক্লাইমাটেক লিমিটেডের মাধ্যমে ব্লু স্টার এক অত্যাধুনিক উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলেছে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রী সিটিতে। সেখানে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। উপরন্তু হিমাচল প্রদেশে ব্লু স্টারের দুটো প্ল্যান্ট রুম এসি তৈরির কাজের সম্পূর্ণ নিয়োজিত। এই উৎপাদন কেন্দ্রগুলো সাম্প্রতিকতম স্বয়ংক্রিয়করণ কৌশলে সজ্জিত। এছাড়া অন্যান্য জিনিসের মধ্যে আছে অ্যাসেম্বলি লাইন এবং মেটিরিয়াল হ্যান্ডলিংয়ের যন্ত্রপাতি। সঙ্গে আছে IoT ও ডিজিটাইজেশনের জন্যে একগুচ্ছ উদ্যোগ। এই প্ল্যান্টগুলোর কারণে এখন ব্লু স্টারের উৎপাদন ক্ষমতা এক মিলিয়ন রুম এসির বেশি। ক্রমশ এটা ১.৮ মিলিয়ন এসি পর্যন্ত পৌঁছবে।
প্রচার বিস্তৃত করা
কোম্পানি ই-কমার্সে ও এবং আধুনিক বাণিজ্য চ্যানেলগুলোতে দ্রুত গতি বাড়িয়ে চলেছে। সেখানে কোম্পানি এক উল্লেখযোগ্য শক্তি, এবং পরিকল্পনা হল খুচরো স্টোরগুলোর ইন-স্টোর ডেমনস্ট্রেটরদের উপর লগ্নি করে যাওয়া। কারণ তাতে অফটেক বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হয়েছে। এছাড়াও কোম্পানি অনলাইন এবং অফলাইন, দুরকম প্রচার পদ্ধতিই উপযুক্ত জায়গা অনুযায়ী গ্রহণ করেছে। ফলে সমস্ত টিয়ারের জায়গাতেই অফটেক বেড়েছে। কোম্পানি নিজের সরবরাহ নেটওয়ার্ককেও আরও মজবুত করছে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে।
এছাড়া ব্লু স্টারের ‘গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড সার্ভিস’-এর ভ্যালু প্রোপোজিশন এবং বেজোড় প্রযুক্তিগত দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে স্বতন্ত্র। কোম্পানি এগুলোতেও লগ্নি করে চলেছে। এখন কোম্পানির ২,১০০-র বেশি পরিষেবা কেন্দ্রের এক সুসংবদ্ধ নেটওয়ার্ক রয়েছে, যাতে প্রকৃতপক্ষে সমস্ত বাজারেই পৌঁছনো যায়। এছাড়াও ১৫০-এর সার্ভিস ক্রু যানের বহর রয়েছে। এই যানগুলো দেশজুড়ে সহজেই নাগাল পাওয়ার মত বিক্রয়োত্তর পরিষেবা দিয়ে থাকে।
ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর বিরাট কোহলি
বিরাট কোহলি ব্লু স্টারের রুম এসির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর থাকছেন। তিনি কোম্পানির ব্র্যান্ড সচেতনতা ও ইকুইটি বাড়াতে তাৎপর্যপূর্ণ সাহায্য করেছেন। উষ্ণতার উপরে মনুষ্যত্ব আরোপ করাকে কেন্দ্র করে তৈরি বিরাট কোহলির টিভি বিজ্ঞাপনগুলো কোম্পানির বাইরের অংশীদারদের কাছে খুবই গ্রহণযোগ্য হয়েছে। কোম্পানি ওই থিমেই নতুন টিভি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে চলেছে, যা টিভি এবং ডিজিটাল চ্যানেলগুলোতে লঞ্চ করা হবে মার্চ মাসে। সব মিলিয়ে কোম্পানির পরিকল্পনা হল এবারের গ্রীষ্মে বিজ্ঞাপনে ৪০ কোটি টাকা লগ্নি করা।
৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ক্রেতাদের জন্য বিশেষ অফার
এবছর ব্লু স্টারের ৮০ বছর পূর্ণ হল। এই ঐতিহাসিক মাইলফলকে পৌঁছনো স্মরণীয় করে রাখতে কোম্পানি লঞ্চ করেছে সীমিত সময় ধরে ক্রেতাদের জন্য একগুচ্ছ বিশেষ অফার। এর মধ্যে আছে ৮০ মাসের ওয়ারেন্টি, দিন পিছু ৮০ টাকার মাসিক কিস্তি, ৬৮০ টাকার ভর্তুকিযুক্ত ইনস্টলেশন এবং সমস্ত এসিতে একাধিক ক্যাশব্যাক ও কনজিউমার ফাইন্যান্স অফার।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
কলকাতায় অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বি ত্যাগরাজন, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ব্লু স্টার লিমিটেড, বললেন “রুম এসির বাজার এখন বাঁক নেওয়ার মুহূর্তে পৌঁছেছে এবং আগামী কয়েক বছরে বিপুল বৃদ্ধি পাবে। ইন্ডাস্ট্রির হিসাব বলছে বাজারটা ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এটা আমাদের পক্ষে এক বিরাট সুযোগ। কারণ আমাদের এসির ব্যাপারে ৮০ বছরের বেশি সময়ের পারদর্শিতা রয়েছে এবং বাজারে আমাদের জায়গা মজবুত। ব্লু স্টার আর অ্যান্ড ডি, উৎপাদনের পাশাপাশি সরবরাহ শৃঙ্খলে তাৎপর্যপূর্ণ লগ্নি করে চলেছে, যাতে বেড়ে চলা চাহিদাকে কার্যকরভাবে সামলাতে দক্ষতা ও ক্ষমতা বাড়ানো যায়। আমরা অনুমান করছি আসন্ন গ্রীষ্ম প্রখর হবে এবং রুম এয়ার কন্ডিশনারের জোরদার চাহিদা থাকবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে সমস্ত কনজিউমার সেগমেন্ট ও দাম জুড়ে আমাদের সমীহ জাগানো রুম এসির ব্যাটেলিয়ন সমেত আমরা বাজারের বৃদ্ধির চেয়েও বেশি বৃদ্ধি অর্জন করব।”