বেআইনী চাকরির সুপারিশদাতা জানতে শিক্ষামন্ত্রী কে ডাকতে পারেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা। কোন চাকরি প্রার্থীদের নামে বেআইনিভাবে সুপারিশ করা হয়েছিল,সেই তালিকা ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে এসএসসি । সেই সব প্রার্থীদের নিয়োগ বাতিল করার অনুমতি চেয়েই স্কুল সার্ভিস কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। মামলা চলাকালীন এবার সরাসরি শিক্ষামন্ত্রীর নাম উল্লেখ করলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।এদিন মামলা চলাকালীন বিচারপতি বলেন, -‘ হয়ত জানা যাবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদই আসল কালপ্রিট। যদি পর্ষদ কিছু করতে না পারে, তাহলে শিক্ষামন্ত্রীকে ডেকে পাঠাতে হবে’। একই সঙ্গে বেআইনি সুপারিশের তালিকায় নাম থাকা ৯ জন এদিন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেই ৯ জনের ওএমআর শিট খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।এদিন নিয়োগ বাতিল করার অনুমতি চাইলে বিচারপতি বলেন, -‘ আপনারা যদি নিয়োগ বাতিল করতে চান, করুন। কোথায় বাধা?’ বিচারপতি জানান , -‘ স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ বাতিল করার এক্তিয়ার রয়েছে’।আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, দু দফায় বেআইনিভাবে সুপারিশ করা নামের তালিকা প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। তালিকায় থাকা মোট ১৮৩ জনের মধ্যে ৮১ জন বর্তমানে চাকরি করেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯ জন এদিন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। হাইকোর্ট এদিন নির্দেশ দিয়েছে, ওই ন’জনকে নিয়ে বৈঠক করতে হবে কমিশন। উপস্থিত থাকবেন ন’জনের আইনজীবী, কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনের আইনজীবী। আগামী সপ্তাহে বুধবারের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।এই ন’জনের ওএমআর শিট খতিয়ে দেখতে হবে বলে উল্লেখ করেছে হাইকোর্ট । কীভাবে এই কয়েকজন বাকিদের টপকে সুপারিশ পেয়েছে, তার যথাযথ উত্তর দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। বলেছেন, অযৌক্তিক সওয়াল শোনা হবে না। আগামী ২২ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ।কে কে তাঁদের হয়ে সুপারিশ করেছিলেন? তা জানতে চেয়েছে আদালত। শুক্রবার নবম-দশম শ্রেণির সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। মামলাকারী পূর্বিতা রায়ের অভিযোগ ছিল, বয়স ও মেধা না থাকা সত্ত্বেও ৯ জনকে বেআইনিভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে।এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে যে ১৮৩ জন ‘অযোগ্য’ শিক্ষকের তালিকা ও ওএমআর শিট প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল সেখান থেকেই এই তথ্য পাওয়া গেছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘এই নিয়োগের বিষয়ে কার কার সুপারিশ ছিল?’এর পরেই বিচারপতি বলেন, ওয়েটিং লিস্টে থাকা যে ৯ জন চাকরিপ্রার্থীদের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের যদি বয়স ও মেধা না থাকে তবে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আগামী বুধবার এসএসসি, মামলাকারীর আইনজীবী ও আবেদনকারী মিলে বৈঠক করবে। তারপরই এসএসসি এই নিয়ে আগামী ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।আদেশনামায় আরও বলা হয়েছে, যদি এই ৯ জন মামলায় অন্তর্ভুক্ত হতে চান তবে তা হতে পারেন। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে তাঁরা এই মামলায় যুক্ত হচ্ছেন কিনা? ইমেলের মাধ্যমে তাঁরা আবেদন জানাতে পারবেন বলে আদালত জানিয়েছে ।