বিধানসভার ভেতরে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে শুভেন্দু, শুনানি ১৯ জুন?
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাস বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তারক্ষীদের প্রবেশের মামলায় একাধিক প্রশ্ন তুললো। ‘বিধানসভার নিরাপত্তা ব্যাবস্থা যথেষ্ট আঁটোসাটো’ বলে আদালতে জানালো রাজ্য। আগামী ১৯ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।ওই দিন এ ব্যাপারে আদালতকে বিস্তারিত জানাতে বিরোধী দলনেতার আইনজীবীকে নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। বিধানসভার বাদল অধিবেশনের শুরুতেই নিরাপত্তারক্ষীদের বিধানসভায় প্রবেশের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার ভিতরে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিধানসভা চত্বরে শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তারক্ষীদের প্রবেশাধিকার চেয়ে আগেই মামলা হয় হাইকোর্টে । বিরোধী দলনেতার বক্তব্য ছিল, -‘যদি বিধানসভায় রাজ্য পুলিশ ঢুকতে পারে, তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ঢুকতে বাধা কোথায়? কেন একই জায়গায় দু’ধরনের নিয়ম বলবৎ করা হয়েছে?’ বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অমৃতা সিনহা একাধিক প্রশ্ন করে জানতে চান, ‘শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই নিরাপত্তাই পান? বিধানসভার ভিতরেও হুমকির বিষয় আছে নাকি! যার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজন! আপনি আপনার নিরাপত্তারক্ষী ভিতরে প্রবেশ করাতে চাইছেন? এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তী নির্দেশ কীভাবে সম্ভব?’ বিধানসভার ভিতরে প্রবেশ করে কীভাবে বাইরের মানুষ হুমকি দেবে বিধায়কদের!’ বিরোধী দলনেতার তরফের আইনজীবী এদিন শুনানিতে আদালতে জানান, -‘বিরোধী দলনেতা সহ অন্যান্যরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বিধানসভার ভিতরে’। বিচারপতি অমৃতা সিনহা রীতিমতো বিস্মিত হন এই বক্তব্যে। বিচারপতি বলেন, ‘পরিস্থিতি বোধহয় এতটা খারাপ নয়। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত শুনানির প্রয়োজন রয়েছে।” তিনি আগামী ১৯ জুন মামলাটির শুনানির আশ্বাস দিয়েছেন।বিরোধী দলনেতার পক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, -‘শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী নন, একাধিক বিধায়কও বিধানসভার ভিতরে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তাঁরাই এই মামলার পেছনে রয়েছেন’। রাজ্যের আইনজীবী পাল্টা যুক্তিতে জানান, -‘গত ৭ ফেব্রুয়ারি শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার সচিবালয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, তাঁর উপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু বিধানসভার নিরাপত্তা এতটাই কড়া যে, বাস্তবে সেখানে এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা নেই’। এরপর বিরোধী দলনেতার আইনজীবী বলেন, “নিরাপত্তার অভাব হঠাৎ করেই হতে পারে। যেমন কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের হামলার কথা কেউ আগে জানত না।”রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, -‘বাংলাদেশে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখ বিরোধী দলনেতা তাঁর উপর হামলা হতে পারে আশঙ্কা করে বিধানসভার সচিবালয়ে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। বিধানসভার নিরাপত্তা ব্যাবস্থা যথেষ্ট আঁটোসাটো। এখন কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়’। বিরোধী দলনেতার পক্ষের আইনজীবীর দাবি, ‘নিরাপত্তার অভাব যেকোনো সময় হতে পারে। কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের ঘটনার কথা কি আগে থেকে কেউ জানতো?’ বিচারপতি মামলাটি শুনানির আশ্বাস দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৯ জুন। ওই দিন এ ব্যাপারে আদালতকে বিস্তারিত জানাতে বিরোধী দলনেতার আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।