Spread the love

বর্ধমানের বিদ্যালয়ে পালিত হলো বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তী

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

    সম্পূর্ণ করোনা বিধি মেনে এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে এই ছোট্ট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১২ ই জানুয়ারি পূর্ব বর্ধমানের রথতলা মনোহরদাস বিদ্যানিকেতনে পালিত হলো যুব সমাজের 'আইকন' স্বামী বিবেকানন্দের ১৬০ তম জন্মজয়ন্তী। স্বামীজীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং মঙ্গলদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র তথা বর্ধমান দক্ষিণের জনপ্রিয় বিধায়ক খোকন দাস।

        ছাত্রছাত্রীদের অনুপস্থিতিতে কার্যত অনুষ্ঠানটি ছিল ছোট্ট এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মত। যেহেতু ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়নি তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষিকা সোনালি দাশ ও তার শিশু পুত্র পরিবেশিত সংগীতের মূর্ছনা সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে এক অন্যমাত্রা এনে দেয়। অনুষ্ঠানে বিধায়ক সহ বিভিন্ন বক্তা স্বামীজীর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

      স্হানীয় বিধায়ক খোকন দাস   বর্তমান সময়ে স্বামীজীর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা করেন। তিনি বলেন - স্বামীজীর কার্যকলাপ যত বেশি করে আমরা যুব সমাজের সামনে তুলে ধরতে পারব তত সমাজ তথা দেশ উপকৃত হবে। বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক  শ্রীজীব লাহা স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। 

      স্বাগত ভাষণ দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্বামীজীর ভাববাদী দর্শন, তাঁর বাণী, শিক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক এবং বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় স্বামীজীর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গম্ভীর আলোচনা করেন। তিনি বলেন - বিবেকানন্দ মানেই একটা আবেগ, একটা প্রেরণা। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত উক্তি - 'ভারতবর্ষকে জানতে গেলে বিবেকানন্দকে জানতে হবে'। তিনি মনে করেন এই একটা উক্তিই ভারতের বুকে বিবেকানন্দ কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা প্রমাণ করে দেয়।

        বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক  বিশ্বনাথ দাসের সুযোগ্য সঞ্চালনার গুণে আকারে ছোট্ট হলেও গুরুত্বের দিক দিয়ে  অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত মনোগ্রাহী হয়ে ওঠে । মূলত তার  অনুরোধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় আবৃত্তি পাঠ করে শোনান। 

      অনুষ্ঠানের শেষে প্রধান শিক্ষকের  উদ্যোগে বিদ্যালয়ের পাশের রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এমনকি যাদের মাস্ক ছিলনা তাদের মাস্কও পড়িয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে করোনা সম্পর্কে মানুষদের সচেতন করা হয়। আতঙ্কিত না হয়ে নুন্যতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রত্যেককে অনুরোধ করা হয়। স্হানীয় বাসিন্দারা  বিদ্যালয় শিক্ষকদের এই ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

       অনুষ্ঠানে কেবলমাত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীরাই উপস্থিত ছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই একটি উচ্চ মার্গের অনুষ্ঠানের স্বাদ পাওয়া থেকে তারা বঞ্চিত থেকে যায়। এটা নিয়ে প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকদের আক্ষেপ করতে দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *