বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্পে যততত্র নির্মাণ নিয়ে রাজ্যের রিপোর্ট চাইলো হাইকোর্ট 

মোল্লা জসিমউদ্দিন

বন কি বন্যপ্রাণীদের কাছে সত্যিই নিরাপদ? টেল, রিসর্ট, হোম স্টে বানিয়ে, প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করে ব্যাঘ্রপ্রকল্পকে বাণিজ্যিক বনাঞ্চলে পরিণত করা যায় কি না? তা রাজ্যের কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার  বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্প সংক্রান্ত এক মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানান , ”বাঘ সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত জঙ্গলে রাজ্য কী ভাবে পর্যটন ভিলেজ তৈরি করা হয়েছে?সেখানে পাথর ভাঙা হচ্ছে। পাথর মাফিয়ারা ব্যবসায়িক কাজ করছেন। পাথর কেটে ইট তৈরি হচ্ছে। ওই বিষয়ে রাজ্যের কি ভেবে দেখার প্রয়োজন নেই?”রাজ্যের আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি আরও  বলেন, ”ওই এলাকা ফেলে রেখেছেন কেন? ওখানে নির্মাণ করে ব্যবসা শুরু করুন!” এর পরেই তাঁর নির্দেশ, ”ওই সব এলাকায় কাজ করা বন্ধ করুন। কোনও নির্মাণ থাকলে তা সরিয়ে দিন। রাজ্যকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকার পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।” বক্সার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে কোনও অতিথি নিবাস রাখা যাবে না বলে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত । সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন জয়ন্তী-সহ বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্পের ‘বাফার’ এলাকার বিভিন্ন হোটেল, রিসর্টের মালিকেরা।ওই মামলাতেই সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নির্মাণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। এদিন এই মামলার শুনানিতে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশবিদ কে বিচারপতি বসু বলেন , ”এক সময় আপনি এই সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর এখন ওই বনাঞ্চল বাঁচানোর কোনও সদিচ্ছা দেখতে পাচ্ছি না। এটা আপনার ভাবমূর্তির সঙ্গে মেলে না। বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করুন।” এদিন শুনানিতে রাজ্য জানায়, ওই বনাঞ্চলের একটি অংশ পর্যটনে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে হলেও সংরক্ষিত এলাকা বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার হয়নি। ২০১৩ সালে কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পদ্ধতি মেনে কোনও বনাঞ্চলে ‘রেভিনিউ ভিলেজ’ তৈরি করা যাবে বলেও জানানো হয় রাজ্যের তরফে। উল্লেখ্য , ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্ট দেশের সমস্ত ব্যাঘ্রপ্রকল্পের ‘কোর’ এলাকায় পর্যটন নিষিদ্ধ করেছিল। পাশাপাশি, পর্যটকদের জন্য নির্ধারিত এলাকায় হোটেল, রিসর্ট নির্মাণের ক্ষেত্রেও কিছু শর্ত প্রয়োগ করেছিল। এরেই মাঝে কলকাতা হাইকোর্টে এহেন মামলা যথেষ্ট গুরত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। 

Leave a Reply