ফাঁসি রুখতে কলকাতা হাইকোর্টে জয়নগর কান্ডে আসামি মুস্তাকিন সর্দার
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
আরজিকর কান্ডে শিয়ালদহ আদালতের আমৃত্যু কারাবাস রায় কে সামনে রেখে জয়নগরে নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনে দোষী সাব্যস্ত হওয়া মুস্তাকিন সর্দার ফাঁসির সাজা রদ চেয়ে এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ। জানা গেছে , এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। সোমবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে ।মুস্তাকিনের পক্ষ থেকে তার আইনজীবী জানান, -‘ তাড়াহুড়োয় বিচারে ত্রুটির অভিযোগের কথা জানানো হবে হাইকোর্টে’। ওই আইনজীবী আরও জানান, -‘ আরজি করের মতই মুস্তাকিনের বিচার প্রক্রিয়াও ধোঁয়াশাময়। কেন্দ্রীয় হাসপাতালের ময়নাতদন্তে ছিল না কোনও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ’। ডিএনএ রিপোর্টে নিশ্চিত ধর্ষণের প্রমাণ নেই বলেও মামলায় দাবি করা হয়।এছাড়াও, সাজাপ্রাপ্ত নাবালক হওয়া সত্ত্বেও, তবু তার বিচার কেন বারুইপুর আদালতে হয়েছে? সে বিষয়েও কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির সময় জানাবেন মামলাকারীর আইনজীবী। উল্লেখ্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া মুস্তাকিন সর্দারকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে বারুইপুর আদালত। গত বছর ১৯ ডিসেম্বর ওই মামলায় মূল অভিযুক্ত মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বারুইপুরের ফাস্ট অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজেস কোর্টের বিচারক ।এর পর ২০ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন বিচারক । এর পাশাপাশি, মৃতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত মুস্তাকিন।আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে। আগামী সোমবার তাঁর আবেদনের শুনানির সম্ভাবনা।গত ৪ অক্টোবর দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। ওইদিন রাতে গ্রেফতার করা হয় মুস্তাকিনকে। আরজি কর কাণ্ডের আবহে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কুলতলি। ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামলাতে হিমসিম খেতে হয়েছিল পুলিশকে।ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয়েছিল। ৩০ অক্টোবর বারুইপুর পকসো আদালতে জমা করা হয় চার্জশিট। গত ১৯ ডিসেম্বর তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে বারুইপুর পকসো আদালত। পকসো আইন, খুনের মামলা ও ধর্ষণ-খুনের মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। পরদিন অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর মুস্তাকিনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক।সাজা ঘোষণার দিন আদালতে তোলার সময় মুস্তাকিন দাবি করেছিলেন, -‘তিনি কিছু করেননি। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে’। এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিনি। বারুইপুর পকসো আদালতে তাঁর বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শোনা হয়নি বলে অভিযোগ করলেন। তাড়াহুড়ো করে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করারও অভিযোগ করেছেন।