প্রথমে ছিনতাই পরে চুরির গল্প শুনিয়েও মঙ্গলকোট পুলিশের হাতে পার পেলনা ‘গুনধর’ চালক
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
নগদ দেড় লক্ষের বেশি টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে প্রথমে ছিনতাই পরে চুরির গল্প ফেঁদেছিল এক মোটরভ্যান চালক। গল্প টি কে বাস্তব রুপ দিতে নিজেকে রক্তাক্তও করেছিল সে! তবে সত্য কোনদিন চাপা থাকেনা।অপরাধ দমনে সিদ্ধহস্ত পুলিশ অফিসার তথা মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষের দু দফার জেরা পর্বেই বলে ফেললো সবকিছু। সড়কপথে ঘটনাস্থল বারবার পরিবর্তন করাতে পুলিশের কাছে ধরা খেল ‘আনকোরা’ মোটরভ্যান চালক। রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা আদালতে এসিজেম এজলাসে পেশ করা হয় ধৃত টোটো চালক গৌতম রায় কে।এই মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার রয়েছেন মৃদুল ঘোষ। মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ জানিয়েছেন – ” ধৃতের পুলিশি হেফাজত হয়েছে।” মঙ্গলকোট থানার বড়সড় সফলতা বলা যায় , ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছিনতাই হয়ে যাওয়া ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার।গত ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যার সময় মঙ্গলকোট থানার অন্তর্গত কৈচর পুলিশ ফাঁড়িতে একটি অভিযোগ আসে যে, কাটোয়া থানার অন্তর্গত এক মোটর ভ্যান চালক, যিনি কাটোয়ার একটি চানাচুর কোম্পানির জিনিসপত্র সরবরাহ করেন এবং সন্ধ্যার দিকে বিভিন্ন দোকানে চানাচুর ডেলিভারি দিয়ে ঐ টাকা আদায় করে কাটোয়ার দিকে ফিরেন।কাটোয়ার চানাচুর কোম্পানির মালিক কে গত ২৯ নভেম্বর রাতের দিকে টোটো চালক গৌতম রায় জানান -“মঙ্গলকোটের শীতল গ্রামের ক্যানেল এর কাছে কিছু ব্যক্তির তাকে আটকে জোরপূর্বক তার কাছে থাকা ব্যবসার আদায়ের ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে বাইকে চেপে পালিয়ে যায়”। চানাচুর কোম্পানি মালিক মঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন পরের দিন অর্থাৎ ৩০ নভেম্বর ।ওইদিনই খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ তৎপরতার সাথে তদন্তে নেমে পড়ে এবং বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে।ওই মোটর ভ্যান চালককে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে ঐ মোটর ভ্যান চালকই লোভে পড়ে হয়ে তার মালিকের টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং টাকা নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রেখে পুলিশের সামনে প্রথমে ছিনতাই পরে চুরির গল্প শোনায়।মঙ্গলকোট থানার পুলিশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করে এবং ওই মোটর ভ্যান চালককে গ্রেফতার করে থাকে ।মঙ্গলকোট পুলিশ সূত্রে জানা যায় যে, কাটোয়ার শ্রীখণ্ড থেকে মঙ্গলকোটের কৈচর সড়কপথে বিভিন্ন সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পূঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় । তারপর স্থানীয় এলাকাবাসী, রাস্তার দু ধারে দোকানদারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কোথাও এই ধরনের ঘটনা না দেখতে পেয়ে ফের মোটর ভ্যান চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে জেরা করা হয়। তার কথাবার্তায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরপর দীর্ঘ চার ঘণ্টার উপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে সম্পূর্ণ ঘটনা সেই ঘটিয়েছে। তার বাড়ি থেকেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার নাম গৌতম রায় বাড়ি কাটোয়ার শুড্ডা গ্রামে।বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে এই চালক।