Spread the love

প্যানেলে নাম না থাকা সত্বেও কিভাবে চাকরি?  হলফনামা দিয়ে চাকরিরতদের জানাবার নির্দেশ 

মোল্লা জসিমউদ্দিন , ১৫ মার্চ
মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাটি উঠে।এদিন ডিভিশন বেঞ্চের তরফে সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই তদন্ত প্রক্রিয়ার উপর দু সপ্তাহের অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্যানেলে নাম না থাকা স্বত্ত্বেও  কিভাবে চাকরি মিলেছে?  তা সরাসরি  কর্মরত শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট এর ডিভিশন বেঞ্চ । দুদিনের মধ্যেই হলফনামা চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, – ‘ সংশ্লিষ্ট  শিক্ষকদেরই জানাতে হবে তাঁরা কিভাবে, কার মাধ্যমে  শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন?’ উল্লেখ্য গত ২০১৬ সালে মাধ্যমিকস্তরের  নবম-দশম শ্রেণিতে বাংলার শিক্ষক হিসাবে চাকরি পান পূর্ব মেদিনীপুরের জুঁই দাস এবং মালদহের আজাদ আলি মির্জা।মামলাকারীদের দাবি, – ‘ওই নিয়োগের জন্য যে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে তাঁদের নাম ছিল না। তার পরেও তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, এত দিন স্কুলে কর্মরত রয়েছেন’। এইবিধ নানান তথ্য দিয়ে  মামলা দায়ের হয় কলকাতা  হাইকোর্টে। মামলাকারীদের আইনজীবী জানিয়েছেন  –  ‘আমরা হাইকোর্ট কে জানিয়েছি, ওই নিয়োগ প্যানেল বহির্ভূত ছিল। তার সপক্ষে যে সব তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে তাতে আদালত সন্তুষ্ট।’ সম্প্রতি   এই মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল  বেঞ্চ। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। এদিন। ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলাটির শুনানি। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ – অভিযুক্ত  চাকরিরতদের দু’দিন সময় দিয়েছে। তার মধ্যে হলফনামা দিয়ে  জানাতে বলা হয়েছে, তাঁরা কিভাবে ওই চাকরি পেলেন? আগামী  বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় গত ৩  মার্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার  কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের  নির্দেশের উপর দু সপ্তাহের অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার মাধ্যমে যে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়, তাতে প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও শেখ ইনসান আলি নামে ব্যক্তিকে দু’বার সুপারিশপত্র দেওয়া হয়। ওই প্রার্থী কখনও কাউন্সেলিংয়েও অংশ গ্রহণ করেননি বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে । কলকাতা হাইকোর্ট এটা নিশ্চিত , -‘ এটা কোনও ভুল নয়। এর পেছনে জড়িয়ে রয়েছে বড়সড় দুর্নীতি। স্কুল সার্ভিস কমিশন এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পাঁচজন সরকারি আধিকারিককে নিযুক্ত করেছিল। সেই পাঁচ আধিকারিকের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ। অন্যদিকে, জুঁই দাস ও আজাদ আলি মির্জা নামে দু’জন বাংলা বিষয়ে চাকরি পাওয়া প্রার্থী এই মামলায় যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এঁদের নাম ছিল না প্যানেলে। এদিন জুঁই দাসের তরফে আইনজীবী  বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চে জানান, -‘  এই ব্যাপারে হলফনামা দিয়ে নিজের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হোক’। এরপরই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী বৃহস্পতিবার হলফনামা দিয়ে  বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে।এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী  বৃহস্পতিবার । আর একটি অন্য মামলায় আরেকজন আইনজীবী  জানান, -‘ গুরুপদ গড়াই নামে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক প্রার্থী জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন। কিভাবে তিনি চাকরি পেয়েছেন হলফনামা দিয়ে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত । আগামী ২৯ মার্চ আদালতে হাজির হয়ে জানাতে হবে কিভাবে তিনি এই চাকরি পেয়েছেন।কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চে এইবিধ অভিযোগ ঘিরে কয়েকটি মামলার শুনানি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *