পূর্ব বর্ধমানে ডাকঘর প্রতারণা মামলায় সিআইডি কে তদন্তভার হাইকোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট ডাকঘর প্রতারণা মামলায় গুরত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল । পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর পোস্ট অফিসে রাখা টাকা উধাও হওয়ায় মামলায় রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাত হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দিয়েছেন -‘এই ঘটনার তদন্ত করবে অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল সিআইডি।আগামী ৬ মাসের মধ্যেই তদন্ত শেষ করতে হবে’।কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলায় আরও জানিয়েছে, -‘সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। কেন পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি? সিআইডিকে সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখতে হবে’। তদন্তে ঢিলেমি নিয়ে আগের তদন্তকারী অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করারও নির্দেশ দিয়েছে সিআইডিকে।ডাকঘর প্রতারণা মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ , -‘টাকা লোপাটের ঘটনায় দেড় বছর ধরে জামালপুর থানা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি’। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে প্রতারিত হলে মানুষ যাবে কোথায়? কেন সরকারি প্রতিষ্ঠানে মানুষের গচ্ছিত টাকা থাকবে না?’ প্রসঙ্গত জামালপুর ডাকঘরে স্থানীয় আমানত হিসেবে ১২ লক্ষ টাকা জমা রেখেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন সুরজিৎ পাল । সেই টাকা না পাওয়ায় তিনি তঁর অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার পর্যন্ত করতে পারছেন না। সেই করণেই তিনি কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।গত ৩১ জনুয়ারি এই মামলার শুনানিতে মামলকারী সুরজিৎ পাল অভিযোগ করেছিলেন -‘ডাকঘর থেকে টাক ফেরত না পেয়ে তিনি থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি’। সেই দিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দিয়েছিলেন,-‘ ওই ঘটনায় তদন্ত কী ভাবে হয়েছে,? কী পদক্ষেপ করছে পুলিশ? এক সপ্তাহের মধ্যেই তা জানাতে হবে। পাশাপাশি মামলার কেস ডায়েরিও তলব করেছিল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি পর্বে পুলিশের জবাবে অসন্তুষ্ট বিচারপতি তদন্তের ভার সিআইডিকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২১ সালে ১২ ক্ষ টাকা পোস্ট অফিসে জমা করেছিলেন মামলাকারী সুরজিতের বাবা রণজিৎ পাল। ২০২২ সালে সেই টাকা তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু পোস্ট অফিস সেই টাকা দিতে ব্যর্থ হয়। তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু কোনও সাড়া না পেয়ে শেষপর্যন্ত আদালতের দরজায় কড়া নাড়েন।এদিন শুনানির সময় বিচারপতি বলেন, “গত দেড় বছরে জামালপুর থানা কিচ্ছু করেনি। কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে যদি এই ভাবে মানুষ প্রতারিত হয় তাহলে মানুষ যাবেন কোথায়?” বিচারপতির মন্তব্য, “কেউ কোনও দায়িত্ব নেবে না। একটু কঠিন কাজ হলে সবাই দায় এড়িয়ে যাবে।”বিচারপতি এ দিন পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের হাত থেকে এডিজি সিআইডিকে তদন্ত হস্তান্তর করেন। এই মামলার আগের দায়িত্বে থাকা দুই আইও কে ডেকে পাঠানোর নির্দেশ দেন এডিজি সিআইডিকে। ওই দুই অফিসার এই তদন্তে কী কী পদক্ষেপ করেছেন, তাঁদের থেকে ব্যাখ্যা নিতে হবে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করতে হবে পুলিশকে।