পুলিশের একাংশের ‘বেহিসাবি আয়’ নিয়ে জনমানসে উঠছে প্রশ্নচিহ্ন,

অজয় উপকূলীয় থানার এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির আর্থিক পরিধি সীমাহীন।

 নিজস্ব প্রতিনিধি, , 

ঘটনা ১/,  উত্তরবঙ্গের সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপস্থিতির ভুয়ো তালিকা তৈরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপে অভিযুক্ত কনস্টেবলের স্ত্রী  কে গ্রেপ্তার করলো কোচবিহার জেলা পুলিশ । কনস্টেবল আশরাফুল আলমের স্ত্রী বিন্তি বেগমকে শনিবার গ্রেপ্তার করে থাকে  পুলিশ। পুণ্ডিবাড়ি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে।কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত অভিযুক্ত কনস্টেবল আশরাফুল আলম। সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতন সংক্রান্ত বিষয় দেখার দায়িত্ব ছিল আশরাফুলের। গত ৮ সেপ্টেম্বর এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর হইচই পড়ে যায়।তাকে সাসপেন্ড করা হয়। কোচবিহারের ডিএসপি ক্রাইমের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু করা হয়েছিল। শোরগোলের পর থেকেই পলাতক কনস্টেবল আশরাফুল আলম। তার স্ত্রী বিন্তি বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  ওই কনস্টেবলের স্ত্রী বিন্তি বেগমের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হিসাব বহির্ভূত বিপুল টাকার লেনদেন হয়েছে। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জেলা পুলিশ সুত্রে প্রকাশ ।ঘটনা ২/, রামপুরহাটে অতি সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিস কনস্টেবল মনোজিত্‍ বাগিশ।মনোজিৎ বাগিশের যে সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তা চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো। গত ৪ বছরে তাঁর যা আয়, তার থেকে অনেকগুণ বেশি সম্পত্তি করেছেন তিনি। গত ৪ বছরে মনোজিতের বেতন থেকে আয় ১১ লাখ ১২ হাজার ১৩৯ টাকা। কিন্তু তাঁর সম্পত্তি রয়েছে ১ কোটি টাকারও বেশি। তবে মনোজিত্‍কে গ্রেফতার করলেও প্রথমেই খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর বান্ধবী বুলা কর্মকারের। তদন্তে উঠে আসে, বান্ধবীকে ১১ লাখ টাকার গাড়ি উপহার দিয়েছেন মনোজিত্‍। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে লাখ লাখ টাকা তিনি পাঠিয়েছেন বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে। ২১ লাখ টাকা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন মনোজিত্‍। ঘটনা ৩/,গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এর এজলাসে উঠে উত্তরবঙ্গের ডালখোলা থানার এক সাব ইনস্পেকটর এর গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার নামে তোলাবাজি সংক্রান্ত মামলা। এই মামলায় বিচারপতি সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের তোলাবাজির ভিডিও দেখে ক্ষুব্ধ হন। সেইসাথে সিআইডি কে নুতন করে এফআইআর দাখিল করে তদন্তের নির্দেশ দেন।  এক ট্রাক চালক ওই পুলিশ অফিসারের তোলাবাজির ভিডিও তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছেন সুবিচারের আশায় ।এইরকম পুলিশের তোলাবাজির উদাহরণ রাজ্যের কমবেশি এলাকায় প্রায়শই দেখা যায় বলে অনেকেই জানাচ্ছেন ।তবে পুলিশের একাংশ যেমন তাঁদের বেহিসাবি আয় নিয়ে জনমানসে পুলিশি ইমেজ নিয়ে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। অপরদিকে পুলিশেরই একাংশ নিজের জীবন কে বাজি রেখে ডিউটি করে চলেছেন অত্যন্ত সততায় । ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে অজয় নদের উপকূলে থাকা এক থানার  ‘ঘনিষ্ঠ’ এক ব্যক্তির বিপুল সম্পত্তির উৎপত্তি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীদের মনে প্রশ্ন উঠেছে। ওই ব্যক্তি পুলিশ নন,তবে থানায় পড়ে থাকেন সর্বদা। সিউড়ি – বর্ধমান  সড়কপথে ওই ব্যক্তি প্রসাদ-প্রতিম  লজ গড়েছেন।ওই লজে আবার মধুচক্র চলে বলে শোনা যায়। বেশ কয়েকটি বাস – ডাম্পার রয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ। আরও জানা গেছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা – বালির ঘাট তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দীর্ঘদিন। শীতকাল এলে ওই এলাকায় তিনি আবার জুয়া মেলার আয়োজনও করে থাকেন। স্থানীয় শাসক দলের একাংশের স্নেহভাজন হওয়ায় ওই ব্যক্তি দিনের পর দিন তাঁর আর্থিক পরিধি ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছেন বলে স্থানীয়দের দাবি।ওই ব্যক্তি পুলিশের একাংশের সরাসরি মদত না পেলে দীর্ঘদিন এইসব করতে পারেন না বলে অনেকেরই অভিমত। সারা রাজ্য জুড়ে পুলিশের একাংশের বেহিসাবি আয় নিয়ে জনমানসে বিভিন্ন প্রশ্নচিহ্ন দেখা যাচ্ছে।তবে এটাও সত্য পুলিশের একাংশ নিজের জীবন কে বাজি রেখে সাধারণ মানুষদের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখছেন সর্বদা। 

Leave a Reply