নবরূপে রাইপুরের চাঁদুডাঙ্গা গ্রামে মা মহামায়া মন্দির।
সাধন মন্ডল বাঁকুড়া:—-
আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা আগামী বৃহস্পতিবার তেসরা এপ্রিল বাংলা ২০শে চৈত্র জঙ্গল মহলের রাইপুরের নিকট চাঁদু ডাঙ্গা গ্রামে মা মহামায়া নতুন মন্দিরে অধিষ্ঠান করবেন। তার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে ।দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন প্রায় ২ শতাধিক কর্মী। এদিকে যেমন মন্দিরের বিভিন্ন কারুকার্য সম্পন্ন করতে কর্মীরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তেমনি উদ্বোধনের দিন প্রায় লক্ষাধিক মানুষের দুপুরের মধ্যাহ্ন প্রসাদের ব্যবস্থায় মন্দির কমিটির সদস্য বৃন্দ এলাকার বিভিন্ন গ্রামে প্রান্তে প্রান্তে গিয়ে ভিক্ষা আদায়ে বেরিয়ে চলেছেন সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত। এ ব্যাপারে মন্দির কমিটির সম্পাদক বিশিষ্ট শিক্ষক সমাজসেবী বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে এলাকার মানুষজনদের নিয়ে প্রথম বৈঠক হয় যে মায়ের ছোট মন্দির কে নতুন ভাবে সাজাতে হবে এবং তার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয় একটি নতুন মন্দির তৈরি করার সেই ভাবনা থেকে কাজ শুরু হয় প্রথমে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয় পরবর্তী দিনে মন্দিরে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করার পর মন্দিরের রূপরেখা যেভাবে তৈরি করা হয় তাতে প্রায় ৫কোটি টাকা খরচের একটি হিসেব দেখা যায়। মন্দির তৈরির শুরু থেকেই এলাকার মানুষের কাছে ভিক্ষায় বের হয় মন্দির নির্মাণ কমিটি রাইপুর ,সারেঙ্গা, সিমলাপাল ,খাতড়া ,হীড়বাঁধ, তালডাংরা সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এমনকি রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে বিভিন্ন এলাকার ভক্তবৃন্দদের কাছ থেকে ভিক্ষায় ভালো সাড়া পাওয়া যায়। সেই থেকে কাজ চলছে মন্দিরটি সম্পূর্ণ করতে প্রায় ৬ কোটি টাকা লাগবে বলেও তিনি জানান। অন্যদিকে এই মন্দিরটির রুপরেখা ও কারুকার্য সমস্ত কিছুই পরিকল্পনা রূপায়ণে বিশিষ্ট শিল্পী চন্দন রায় দেখভাল করছেন। তারই হাতের ছোঁয়ায় দক্ষিণ বাঁকুড়ায় একটি সুদৃশ্য দৃষ্টি নন্দন মন্দির তৈরি হচ্ছে যা পর্যটন মানচিত্রে একটি স্থান করে নেবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা চোখ জুড়ানো এই মন্দির পরিদর্শন করে গেছেন। যার উদ্বোধন হবে আগামী বৃহস্পতিবার তেসরা এপ্রিল উদ্বোধন করবেন চিলতোড় গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবী শক্তিপদ মহাপাত্র। মন্দির উদ্বোধনের আগের দিন অর্থাৎ বুধবার কংসাবতী নদীর কালাঘাট থেকে ঘট নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে কয়েক হাজার ভক্তের সমাগমে বিভিন্ন নৃত্য দল কীর্তন পার্টির সুসজ্জিত শোভাযাত্রা রাইপুর বাজার পরিক্রমা করে মায়ের মন্দির প্রাঙ্গণে হাজির হবেন তারপর দিনভর চলবে পুজো পাঠ। বৃহস্পতিবার সকাল দশটার মধ্যে মাকে তার নতুন মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হবে।। এই মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে দুপুরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মধ্যাহ্ন প্রসাদের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য উদ্বোধনের পরদিন থেকে মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হবে রাধা নাম সংকীর্তন নবকুঞ্জ মহোৎসব। এই উদ্বোধন ও নবকুঞ্জ মহোৎসব উপলক্ষে মন্দির ও মন্দির প্রাঙ্গণ এবং রাইপুর বাজার থেকে মন্দির প্রাঙ্গণ পর্যন্ত সারা রাস্তা জুড়ে থাকছে সুদৃশ্য আলোক চিত্র। এখানে চন্দননগরের সুদৃশ্য আলোক মালায় সাজানো হয়েছে যা দেখতে ইতিমধ্যেই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শয়ে শয়ে মানুষ হাজির হচ্ছেন প্রতিদিন । আজ রবিবার এলাকা পরিদর্শন করেন রায়পুর থানা পুলিশ প্রশাসন ও থানার আইসি পলাশ কুমার বারিক। এখানে উল্লেখ্য মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে এলাকাকে সিসিটিভিতে মুড়ে ফেলা হচ্ছে। মন্দির উদ্বোধন ও নবকুঞ্জ মহোৎসব উপলক্ষে যাতে কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য সচেষ্ট রায়পুর থানা পুলিশ ও বাঁকুড়া জেলা পুলিশ প্রশাসন।