নদী
কিরীটী ভট্টাচার্য্য
(জামশেদপুর)
সিন্ধু গঙ্গা মেঘনা যমুনা অথবা সরস্বতী
পদ্মা ভলগা ভাগীরথী কোশী কিম্বা ইরাবতী
তিস্তা তোরসা রাভী জলঢাকা বহমান কিংকিনি
হাসে শতদ্রু বিতস্তা হাসে চাঁদভাগা স্রোতস্বিনী
ঝিলমের পাড়ে লেখা আছে কতো ইতিহাস বীর গাঁথা
বুড়ি গঙ্গার দুপাড় স্বাক্ষী সংগ্রামী যতো কথা
আজ তেজহীন তুমি দামোদর তবু বও নিরবধি
হোয়াং হোর মতো তুমি এদেশের ছিলে যে দুঃখের নদী
ব্রহ্মপুত্র গর্জায় আজো বীভৎস তার রূপ
প্রতি তরঙ্গে জাগে বিদ্রোহ বাকি সব রয় চুপ
রূপে মাধুর্যে বও নিরবধি তুমি যে কাবেরী কৃষ্ণা
নর্মদা বুকে মুগ্ধতা বয় গোদাবরী মেটায় তৃষ্ণা
তুমি গণ্ডক সুখ দুখ বয়ে সংকোশে সংযমে
পাপ আর পুণ্য মিলে একাকার ত্রিবেণীর সঙ্গমে
একুল ওকুল ভাসায়ে দুকূল নিয়ে সব একখানে
সাগরে মিলাও অনন্ত মাঝে চেয়ে রই তব পানে।।
আরো আছে কেউ আজও বয়ে চলে
অথবা শুকিয়ে গেছে
দুই পাড়ে তব চলার পথের ইতিহাস এঁকে পাছে
একদিন সব করি গর্জন বইতো যে রিনিঝিনি
মন্দ্রমুখর কুলুকুলু বেগে মনের মন্দাকিনী
কভু উত্তাল উথাল পাথাল ভাসিয়ে দুইটি কুল
কভু বা শান্ত চির প্রশান্ত যেন বা মনের ভুল
গিরিপথ বেয়ে আসো ধেয়েধেয়ে পাহাড়ের বুক চিরে
নীরবতা মাঝে তুলে ঝংকার সোচ্চারে যাও ফিরে
মানোনা যে বাধা আসো বেগে ছুটে ধরার এই সমতলে
কভু বা সুখের বার্তারে বয়ে কভু দুখের অশ্রুজলে
তবুও মিনতি করি তব কাছে অবোধ এই সন্তান
তব কুলুকুলু ধ্বনী যেনো হয় মানবের জয়গান
তুমি মা ধাত্রী জন্মদাত্রী প্রকৃতির অন্দরে
চেতনা সাগর তোলো মা জাগায়ে মানসের সরোবরে।।