ধৃত এসএসসির প্রাক্তন কর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্য কে নিয়ে সিবিআইয়ের রিপোর্ট তলব ডিভিশন বেঞ্চের
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন সদস্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের মামলাটি।এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।হাইকোর্টে সুবীরেশের আবেদন , -‘সিবিআইয়ের এফআইআর-এ নাম নেই তাঁর। তদন্ত শেষ, তারপরও তাঁকে ধরে রাখা হয়েছে। তাই জামিন দেওয়া হোক’।এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যের জামিনের আবেদন মামলার শুনানি চলে। সেই শুনানিতে সুবীরেশের আইনজীবী বলেন, -‘ সিবিআই চার্জশিট জমা দিয়েছে। তাঁর মক্কেলের নাম সিবিআইয়ের এফআইআর-এ নেই’। এরপর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী সুবীরেশের আইনজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, -‘উপাচার্য হলে কি অপরাধ করতে পারেন না?’ প্রতুত্তরে সুবীরেশের আইনজীবী বলেন,- ‘তাঁর মক্কেল ৮৮ দিন জেলে রয়েছেন। মামলার তদন্ত শেষ। সিবিআই একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আর কিছু নতুন করে তদন্তের প্রয়োজন নেই’।তারপরই ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই এর আইনজীবী কে প্রশ্ন করে, – ‘তদন্ত কি শেষ?’ সেই প্রশ্নের উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান,- ‘পুনরায় তদন্ত চলছে।’ ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই আরও জানায়, -‘এই মামলার তদন্ত ইডিও করছে’।এই মামলার একটি রিপোর্ট দিতে চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চের সময় চায় সিবিআই ।তদন্তে অসহযোগিতা করার অভিযোগে সুবীরেশকে গ্রেফতার করেছে। আগামী ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে সিবিআইকে এই মামলার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের। গত মঙ্গলবার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জেল হেফাজতে থাকা কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুবীরেশ ভট্টাচার্য কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছেন ।উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য কে নিজাম প্যালেসে তলব করে গ্রেফতার করে থাকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।আদালতে ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, -‘ সুবীরেশ এসএসসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন তাঁর নির্দেশেই কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীর মার্কশিটের নম্বর বদল করা হয়েছিল’। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সিবিআইকে সহযোগিতা না করার অভিযোগও আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর টানা জেরার পরে গ্রেফতার করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। ২০১০ সাল থেকে টানা প্রায় ১০ বছর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতে কল্যাণময়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। এর আগে বিশেষ সিবিআই আদালত এবং হাইকোর্টে সুবীরেশ এবং কল্যাণময়ের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুবীরেশ ভট্টাচার্য।স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে এখনই জামিন দিল না কলকাতা হাইকোর্ট। তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে? সিবিআইয়ের কাছে তা জানতে চাইল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২১ ডিসেম্বর। এরফলে এখন সুবীরেশকে জেলেই থাকতে হচ্ছে।সেখানে সুবীরেশের জামিনের জন্য আর্জি করেন তাঁর আইনজীবী। পাল্টা বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী তদন্তকারীদের কাছে জানতে চান, তদন্ত কোন পর্যায়ে আছে ? কতদিন লাগতে পারে? এদিন বিচারপতি আরও জানতে চেয়েছেন, -‘এই তদন্তের জন্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে হেফাজতে রাখার প্রয়োজন আছে কি? দুর্নীতিতে কি ভূমিকা রয়েছে সুবীরেশ ভট্টাচার্যর? তাঁর বিরুদ্ধে আর কোন মামলা বিচারাধীন রয়েছে কি?’ এ সব প্রশ্নের উত্তর রিপোর্ট আকারে সিবিআইকে পেশ করার নির্দেশ দেয় আদালত। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআই-কে।এদিন আদালতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আইনজীবী সওয়াল করেন, -‘ তাঁর মক্কেল ৮৮ দিন জেলে রয়েছেন। ৫ বার সিবিআইয়ের সামনে হাজিরা দিয়েছেন। এফআইআর-এ তাঁর নাম ছিল না, কিন্তু তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করেছেন। চার্জশিটও দাখিল হয়ে গিয়েছে’। সুবীরেশের আইনজীবীর সওয়ালের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, “সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ ৭ বছর। তদন্তে দেরি হচ্ছে, এই অভিযোগ থাকলে সাড়ে তিন বছর পরে আসুন।”শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশকে নিজাম প্যালেসে তলব করে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার তরফে আদালতে জানানো হয়েছিল, সুবীরেশ ভট্টাচার্য এসএসসি-র চেয়ারম্যান থাকাকালীন নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীর মার্কশিটের নম্বর বদল হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত কিছু তথ্য প্রমাণও রয়েছে। সিবিআই-কে তদন্তে তিনি সহযোগিতা না করার কারণেই গ্রেফতার করা হয়েছিল।আগামী ২১ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। ওইদিনই আবেদনকারী ধৃতদের নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআই কে।