সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : গোপাল দেবনাথ : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২। প্রকৃতির উজাড় করা অকৃপণ ছোঁয়ায় গড়ে উঠেছে ত্রিপুরা রাজ্য। কোনও ভূমিপুত্রের কাছে যা একান্ত গর্বের। এমনই এক ব্যক্তিত্ব গৌর চন্দ্র সাহা। যিনি তাঁর জীবনের অনেকটাই ব্যয় করেছেন তাঁর জন্মস্থান ত্রিপুরার একটি অখ্যাত গ্রাম ওয়ারেংবাড়িতে এলাকার প্রান্তিক মানুষদের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্পে। সেই পূর্ব পুরুষের স্মৃতিতে যদি তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের কেউ জনকল্যাণ কাজে পূর্বসূরি কে অনুসরণ করেন সেটাকে মানবিকতার এক উজ্জ্বল প্রমাণ বলা যেতেই পারে। গৌর চন্দ্র সাহার জামাতা, কলকাতা ও ত্রিপুরার বিখ্যাত স্বর্ণ বিপণি শ্যাম সুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্স এর কর্ণধার রূপক সাহা গত ৩০ জানুয়ারি গৌর চন্দ্র সাহার ৩০ তম প্রয়াণ বার্ষিকী পালন করলেন সারাদিনব্যাপী এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এই শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় গৌরবাবুর গ্রাম ত্রিপুরার ওয়ারেংবাড়িতে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য অনুষ্ঠিত হয় এক স্বাস্থ্য শিবির।যেখানে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বিতরণ হয়। এছাড়াও এলাকার প্রতিটি পরিবারের প্রয়োজনীয় একমাসের রেশন সামগ্রী, কম্বল, কোভিড সুরক্ষাসামগ্রী, মিষ্টান্ন ও অনান্য খাদ্য সামগ্রীও দেওয়া হয়। পাশাপাশি ছোটদের যোগ ব্যায়াম প্রদর্শন ও স্থানীয় কিশোর কিশোরীদের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শ্যামসুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্স এর কর্ণধার রূপক সাহা জানালেন, তেরো বছর আগে আমরা ওয়ারেংবাড়িকে আদর্শ আদিবাসী গ্রাম স্বর্ণগ্রাম হিসেবে তুলে ধরার প্রকল্পটি হাতে তুলে নিয়েছিলাম এই ভেবে, যে এই গ্রামের সমস্ত বাসিন্দাদের সামগ্রিক জীবনযাপন ও জীবিকার মানোন্নয়ন ঘটানোর জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে সচেষ্ট হবো। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই ত্রিপুরা সরকার, রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রম এর সহযোগিতার জন্য। এছাড়াও এই প্রকল্পে যুক্ত সমস্ত চিকিৎসক, সেবা কর্মী, বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদেরও ধন্যবাদ জানাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দৈনন্দিন জীবন যাত্রায় এই গ্রামের মানুষদের উন্নতি আমাদের তৃপ্ত করে।
প্রয়াত সমাজসেবী গৌর চন্দ্র সাহার আত্মজা শ্যামসুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্স এর ডিরেক্টর অর্পিতা সাহা জানালেন, এই গ্রামের প্রান্তিক মানুষদের কল্যাণে আমাদের এই প্রচেষ্টা যদি আমার পিতা দেখে যেতে পারতেন, তিনি যার পর নাই আনন্দিত হতেন। আমরা নিজের ভাগ্যবান বলে মনে করছি কেননা প্রয়াত পিতার মোহন কর্মযজ্ঞে আমরা যুক্ত হতে পেরেছি বলে।