ডেঙ্গু মোকাবিলায় মামলা হাইকোর্টে, বিধানসভায় পরিসংখ্যান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
পারিজাত মোল্লা,
রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের সংখ্যা। মারাও যাচ্ছেন অনেকেই।ঠিক এই মুহুর্তে গত ২০১৭ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে নজরদারি টিম কে পুনরায় সক্রিয় করা এবং রাজ্য সরকারের সমস্ত হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার পরিকাঠামো বাড়ানোর জন্য হাইকোর্টে মামলা দাখিল হয়েছে বুধবার। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আগামী মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। এই মামলার মামলাকারী আইনজীবী হিসাবে রয়েছেন শমীক বাগচি। ডেঙ্গি নিয়ে নজরদারি চালানোর জন্য একটি ‘মনিটরিং সেল’ গঠন করার পাশাপাশি ডেঙ্গি মোকাবিলায় মেডিক্যাল কমিশন গঠনের আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারী। তাঁর আইনজীবী শমীক বাগচী ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার ভিত্তিতে মামলাটি গ্রহণ করে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।আইনজীবী শমীক বাগচি জানান, -‘ রাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। গত কয়েকদিনে সারা রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েকজন মারাও গিয়েছেন ডেঙ্গিতে। গত ১৬ নভেম্বর মালদায় ১৩ বছরের এক কিশোর ডেঙ্গিতে মারা যায়।অথচ কলকাতা পুরসভা সহ অন্যান্য পুরসভা ডেঙ্গি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। রাজ্যের পঞ্চায়েতগুলিও ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যার্থ। হাসপাতালগুলিতে প্লেটলেটের অভাব রয়েছে। তাই এ বিষয়ে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন রয়েছে। মেডিক্যাল কমিশন ও মনিটারিং সেল গঠনের পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে’।এদিন বিধানসভায় পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, -‘রাজ্যে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। তার মধ্যে ৬.জন প্রাণ হারান সরকারি ও ৫ জন বেসরকারি হাসপাতালে। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি ও শিলিগুড়িতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছিল। তবে বর্তমানে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে মশাবাহিত এই রোগ। ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও কমবে ডেঙ্গু’। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ -‘ ডেঙ্গু নিয়ে এতদিন সরকারি ভাবে কোনও তথ্য তুলে ধরা হয়নি। ডেঙ্গুর তথ্য লোকানোর চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার’। তবে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন, -‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই পোর্টালে ডেঙ্গুর তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। অন্য রাজ্যেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। কিন্তু একই নির্দেশ মেনে কেন্দ্র সরকারও কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি’।প্রসঙ্গত, ইতিপূর্বে জেলা সফর থেকে ফিরে নবান্নে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছিলেন মমতা। তারপরই তাঁর নির্দেশ মেনে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করেছিলেন স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা। প্রকাশ করা হয় ১৪ দফা গাইডলাইন। যেখানে হাসপাতালগুলিকে ২৪ ঘণ্টাই ফিভার ক্লিনিক চালাতে বলা হয়। হাসপাতালে ভরতি থাকা ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ২৪ ঘণ্টার ল্যাব সার্ভিসও চালু রাখতে বলা হয়। যাতে টেস্টের রিপোর্ট টেস্টের দিনেই পাওয়া যায় তারও ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়। ব্লাড টেস্টের রিয়েল টাইম রিপোর্টও দ্রুত পাঠাতে হবে যাতে চিকিত্সা শুরু করতে বিলম্ব না হয় তাও রাজ্য সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে।