ঠাকুর – রায় কি তফসিলি? মহকুমাশাসকদের রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
মুকুল বিশ্বাস,
নিজস্ব প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তফসিলি চাকরিপ্রার্থীদের শংসাপত্র নিয়ে মহকুমাশাসকদের কাছে রিপোর্ট তলব করলেন। কিসের ভিত্তিতে শংসাপত্র লিখে দেওয়া হয়েছে? তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট । আগামী দিনে সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকদের আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হতে পারে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি ।নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ, বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীকে তফসিলি জনজাতি না হওয়া সত্ত্বেও শংসাপত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা দেখিয়ে চাকরিও পেয়ে গিয়েছেন অনেকে। ভুয়ো শংসাপত্রের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন হেমাবতী মাণ্ডি-সহ আরও কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। অভিযোগ, -‘ সঠিক শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন’। অন্য দিকে, যাঁদের শংসাপত্র ভুয়ো, তাঁরা চাকরি পেয়ে গিয়েছেন।এই মামলার শুনানিতে এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুর নির্দেশ, -‘ আগামী সাতদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির মহকুমাশাসকদের রিপোর্ট জমা দিয়ে জানাতে হবে, কিসের ভিত্তিতে তাঁরা এই শংসাপত্র দিয়েছেন’। স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্মশিক্ষা বিষয়ে মোট ১৯৭৭ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করে থাকে । তাঁদের মধ্যে ৫৫ জনের নাম ভুয়ো শংসাপত্রের তালিকায় উঠে এসেছে। দেখা গিয়েছে, তফসিলি জনজাতির ভুয়ো শংসাপত্রের সেই তালিকায় রয়েছেন ঠাকুর, রায়, বড়ুয়া, রাউত, দাস, কর্মকার, ঘোড়ুই, মাহাতো, হাসিবের মতো পদবিধারীরাও। মেধাতালিকায় তাঁদের তফসিলি জনজাতি হিসাবে দেখানো হয়েছে। এদিন এজলাসে বিচারপতি যা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ”ঠাকুর, রায়, এঁরা সবাই তফসিলি সম্প্রদায়ের?” তার পরেই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।এখানেই শেষ নয়, দেখা গিয়েছে, একই নামের ১ জনকে এক বার মহিলা এবং এক বার পুরুষ হিসাবে দেখিয়ে ২টি আলাদা শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। তা দেখেও বিস্মিত খোদ বিচারপতি! প্রসঙ্গত , এর আগেও তফসিলি জাতির মেধাতালিকায় ‘ভৌমিক’ পদবি দেখে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ।হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, -‘ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে শুধু মাত্র সরকারের একটি অংশই যে কাজ করেছে তা নয়। এর নেপথ্যে আরও অনেকের হাত রয়েছে’। শংসাপত্র ভুয়ো প্রমাণিত হলে ভুয়ো প্রার্থীদের চিহ্নিত করা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত ২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এসএসসি। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মামলা হয়েছিল। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ২২ ডিসেম্বর।তার আগে মহকুমাশাসকদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।