ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসঙ্ঘের মেলা নিয়ে জেলাপরিষদ কে ১৯ মার্চের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বললো হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিনিধি,
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাস ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসঙ্ঘের মেলা আয়োজনের অনুমতির বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিককে সিদ্ধান্ত নিতে বলল । বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর— দু’পক্ষের আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন ওই আধিকারিক । এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন, -‘ দু’পক্ষের আবেদন বিবেচনা করে মেলার অনুমতি দেওয়া বা বাতিল করার প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে জেলা পরিষদকে। আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে ওই সিদ্ধান্ত জানাতে হবে’। এর পাশাপাশি হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, -‘জেলা পরিষদের কাছে একটি আবেদনই সরাসরি জমা পড়েছে এবং সেটি বিবেচনাধীন রয়েছে। এরফলে কর্তৃপক্ষকে আইন মোতাবেক পুরো বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ‘। বর্তমানে ঠাকুরনগরের ঠাকুর পরিবারে দুই গোষ্ঠীর অশান্তি সর্বজনবিদিত। আগামী ২৭ মার্চ থেকে ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসঙ্ঘের মেলা শুরু হওয়ার কথা। সাধারণত এই মেলা আয়োজনের জন্য জেলা পরিষদ সভাধিপতি অনুমতি দিয়ে থাকেন। শান্তনুর দাবি,-‘ চলতি বছরের মেলার আয়োজন করতে চেয়ে তিনিও সেই মতো আবেদন করেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আবেদন জানান।’ কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ জানাননি বলে দাবি শান্তনুর। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।শান্তনুর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট, জেলা পরিষদের সভাধিপতির অবস্থান জানতে চেয়েছিল। মেলা আয়োজনের অধিকার কোন পক্ষের রয়েছে? তা নিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে জানাতে বলেছিল আদালত। সেই মতো বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে বক্তব্য জানান জেলা পরিষদের অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিক। তিনি আদালতে জানান, -‘শান্তনু আবেদনের স্বপক্ষে তথ্য এবং নথি জমা দেননি। তাই সেই আবেদনটি বিবেচনাধীন রয়েছে’। অন্য দিকে, মমতাবালা পর্যাপ্ত নথি দিয়েছেন এবং তাঁর আবেদনটি গৃহীত হয়েছে।যদিও এ ক্ষেত্রে শান্তনুর আইনজীবীর পাল্টা বক্তব্য,-‘ জেলা পরিষদের কাছে মেলা করার বিষয়ে কোনও আবেদনই করেননি মমতাবালা’। তৃণমূল সাংসদ গাইঘাটা থানায় আবেদন জানান বলে দাবি শান্তনুর আইনজীবীর। তাঁর বক্তব্য, ওই আবেদনপত্রই জেলা পরিষদে গৃহীত হয়। বেআইনি ভাবে ওই আবেদন গৃহীত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ১৯৭৩ সালের পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী ওই মেলার অনুমতি দিতে পারেন কেবলমাত্র জেলা পরিষদের সভাধিপতি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মমতাবালা জেলা পরিষদে আবেদন না করে থানায় আবেদন জানান। থানা থেকে ওই আবেদনপত্রটি গত ৩ মার্চ জেলা পরিষদে যায়। শান্তনুর আইনজীবী আদালতে জানান, মমতাবালার আবেদন পৌঁছনোর আগেই শান্তনু কর্তৃপক্ষের কাছে মেলার বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতি আদালত জানিয়েছে,-‘ আইন মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে’। আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।