টেট প্রার্থী কে চাকরির ফোন, রহস্যের জট কাটছে?
মুকুল বিশ্বাস ,
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এদিন জানানো হয়, -‘ওই নম্বর পর্ষদের কারও নয় । জেলার কারও হতে পারে’ । তবে আদালতের নির্দেশের পর সিবিআই প্রাথমিক ভাবে এদিন আদালতে জানিয়েছে, -‘ নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের ফোন নম্বর থেকেই ফোন গিয়েছিল । তবে তা খতিয়ে দেখা দরকার ‘। বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইয়ের বক্তব্য শোনার পর নির্দেশ দিয়েছেন, – “সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই । কার নির্দেশে তিনি ফোন করে চাকরির কথা বলছেন !”উল্লেখ্য, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই । এই দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে বলে ইডি তদন্তে নেমেছে । ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে । তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও পেশ করেছে ইডি । তাছাড়া সিবিআই ও ইডির তরফে বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদও চলছে । অপরদিকে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে । ইতিমধ্যে বিচারপতি ২৬৮ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন । চাকরি হারানো সেই শিক্ষকদের মধ্যে একজনের দাবি,-‘ ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি ফোন নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে । যিনি ফোন করেছিলেন, তিনি দাবি করেন যে তিনি পর্ষদের অফিস থেকে বলছেন । পর্ষদের অফিসে এসে দেখা করলেই চাকরি পাওয়া যাবে ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন । গত বুধবার শুনানির সময় এক আইনজীবী আদালতে জানান -‘ ওই চাকরি প্রার্থীর নাম শিল্পা চক্রবর্তী । তাঁর কাছেই ফোন এসেছিল’ । এটা শোনার পরই সিবিআইকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় । তা খতিয়ে দেখার পরই বৃহস্পতিবার আদালতে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয় যে নদিয়ার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের নম্বর থেকেই ফোন গিয়েছিল ।স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সত্যিই কি ওই চেয়ারম্যান ফোন করেছিলেন ? নাকি তাঁর ফোন নম্বর ব্যবহার করে অন্য কেউ ফোন করেছিলেন ? যদি সত্যিই তিনি ফোন করে থাকেন, তাহলে এর পিছনে অন্য কেউ জড়িত রয়েছেন ? মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কি ওই চেয়ারম্যানের কোনও যোগ রয়েছে ?এদিন সিবিআইয়ের বক্তব্য শোনার পর বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় । কার নির্দেশে ওই ব্যক্তি ফোন করেছিলেন, তা জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদও করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । ফলে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদে এই নিয়ে আরও তথ্য সামনে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন আদালতে পর্ষদ জানিয়েছে, ওই রহস্যজনক ফোন নম্বর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কোনও আধিকারিকের নয়। অন্যদিকে, সিবিআই জানিয়েছে, নম্বরটি নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের বলে প্রাথমিক পর্যায়ে অনুমান করছেন তাঁরা।এরপরেই বিচারপতি গঙ্গা সিবিআই-কে নির্দেশ দেন, -‘অবিলম্বে যাতে ওই নম্বরের পিছনে থাকা মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা’। এখন দেখার ওই ব্যক্তি টি কে?