টেটের প্রশ্নভূল মামলায় তিন সদস্য বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
টেটের প্রশ্নভূল মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল পিটিশন দাখিল করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল শুনানি। ইতিপূর্বে ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় ৬ টি ভূল প্রশ্নের মামলায় জয় হয়েছে আবেদনকারীদের।২০১৭ ও ২০২২-দুটি টেট নিয়েই অভিযোগ উঠেছে। এবার তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে ওই কমিটিকে। সেই কমিটিতে থাকবেন প্রাথমিক বোর্ডের এক জন সদস্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রতিনিধি ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিনিধি।যদি ওই প্রশ্নগুলি ভুল বলে প্রমাণিত হয়, তার জন্য নম্বর বাড়ালে উত্তীর্ণ হতে পারেন কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী।২০২২ সালে এবং ২০১৭ সালে সর্বমোট ৫০ টির কাছাকাছি প্রশ্ন ভুল ছিল বলে দাবি করেছেন মামলাকারীরা। ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, -‘ প্রশ্নগুলি খতিয়ে দেখবে এই বিশেষজ্ঞ কমিটি। প্রশ্নগুলো আদৌ ভুল কি না? তা খতিয়ে দেখা হবে’।এর আগে এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছিলেন, -‘২০২২ সালের টেটে প্রশ্ন ভুলের মামলায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশ্ন খতিয়ে দেখতে হবে। এছাড়া ২০১৭ সালের মামলায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ কমিটি গড়ে প্রশ্ন খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। দুটি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।২০১৭ সালে প্রাথমিকের টেট মামলায় বাংলা, পরিবেশ বিজ্ঞান-সহ তিন বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন ভুল থাকার অভিযোগ ওঠে। তার ভিত্তিতেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারীদের দাবি, -‘প্রশ্ন যদি ভুলই থাকে, সে ক্ষেত্রে যাঁরা সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই নম্বর দিতে হবে’।২০১৭ ও ২০২২ সালের টেটে একাধিক ভুল প্রশ্ন এসেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এই মামলায় এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিকে প্রশ্ন যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। তবে সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হল না। এবার যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন করে বিশেষজ্ঞ কমিটিতে থাকবেন। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, -‘১৪ দিনের মধ্যে এই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে’।২০১৭ সালের টেটের প্রশ্ন বিশ্বভারতীর বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং ২০২২ সালের প্রশ্ন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি খতিয়ে দেখবে, এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তবে ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৭ এবং ২০২২ সালের ভুল প্রশ্ন সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য এই তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিল।এই মামলার শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দাবি , -‘তারা নিজেরাই বিষয়টি যাচাই করতে সক্ষম। এর জন্য আলাদা করে কোনও বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রয়োজন নেই’। তবে কলকাতা হাইকোর্ট তাঁদের আর্জিতে সাড়া দেয়নি। বরং ডিভিশন বেঞ্চ যে কমিটি গঠন করেছে তাতে প্রত্যেক বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তাঁরা প্রশ্নগুলি ভুল না ঠিক, তা বিচার করবে।এখন দেখার বিশেষজ্ঞ কমিটি কখন গঠন হয় এবং পরবর্তীতে এই কমিটি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে কি রিপোর্ট দেয়?