জুনিয়র চিকিৎসক মোবারকের রহস্য মৃত্যু মামলায় সিট গঠনের নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান জেলার এক জুনিয়র চিকিৎসকের রহস্য মৃত্যু ঘটনায় সিট গঠনের নির্দেশ জারি করলো কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সাড়ে তিন বছর আগেরকার ঘটনা এটি। বর্ধমান মেডিকেল কলেজে জুনিয়র চিকিৎসকের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। এবার সেই মামলাতেই বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত সুত্রে প্রকাশ, গত ২০২১ সালের ১১ আগস্ট রাতে বর্ধমানে মেডিকেল কলেজের হস্টেলের পাশে শেখ মোবারক হোসেন নামে এক জুনিয়র চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়।পরিবার তরফে প্রথম থেকেই দাবি করা হয় তাদের ছেলেকে খুন হতে হয়েছে। সেই মামলার তদন্তেই এবার সিট গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা উঠলে পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপারের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। ২০২১ সালের ১১ আগস্ট রাত আড়াইটা নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জুনিয়র চিকিৎসকের বাবা শেখ হাফিজুল ইসলামকে ফোন করে জানায়, -‘তার ছেলে প্রচন্ড অসুস্থ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালের ভর্তি করানো হয়েছে’। ছেলের অসুস্থতার খবর পেয়ে পরিবার হাসপাতালে পৌঁছলে তারা দেখেন তাদের ছেলে মারা গিয়েছে।চিকিৎসক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে বর্ধমান থানার পুলিস। যদিও খুনের অভিযোগের কিনারা করতে পারেনি স্থানীয় থানার পুলিশ। প্রথম থেকেই মৃত চিকিৎসকের পরিবারের দাবি রয়েছে তাদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তাঁর বাবার দাবি , -‘কলেজেরই প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে ওই চিকিৎসকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। হঠাৎ ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে অস্বীকার করে ওই ছাত্রী। মৃত চিকিৎসকে ব্ল্যাক মেলও করত ওই ছাত্রী’। এমনই অভিযোগ তোলে ওই জুনিয়র চিকিৎসকের পরিবার।পরিবারের আরও অভিযোগ, -‘ছেলের হস্টেল ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তাঁকে শাসায় ওই ছাত্রী। প্রেমিকার চাপে ছেলে হস্টেল ছেড়ে চলে যেতে অস্বীকার করাতেই সুপরিকল্পিতভাবে তাদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার আগের দিন তাঁর ছেলেকে সিনিয়র ডাক্তারদের হস্টেলে একটি পার্টিতে ডেকে ডেকে নিয়ে তাঁকে মারধর করে উপর থেকে ঠেলে ফেলে দেয়’। স্থানীয় থানার পুলিশ তদন্ত করেও খুনের কিনারা করতে না পারায় তদন্তের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হন মৃতের বাবা। পুলিশ পাল্টা পরিবারের যুক্তি খারিজ করে আদালতে জানায় -‘খুনের তদন্তে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে’। আদালতে রিপোর্ট জমা করে পুলিশ। হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ মামলাটি খারিজ করে দেয়। একক বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চে যান মৃতের বাবা। সেই মামলাতেই এবার সিট গঠনের নির্দেশ জারি করলো কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।