ছাত্রসমাজের চারজনের গ্রেপ্তারিতে যুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের আর্জি গ্রহণ হাইকোর্টে
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এর এজলাসে উঠে নবান্ন অভিযানের আগের দিন গ্রেপ্তার হওয়া চার ছাত্রের মামলা। নবান্ন অভিযানের আগের রাতে হাওড়া স্টেশন থেকে চারজনকে গ্রেফতার করেছিল হাওড়া পুলিশ। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ-সহ একগুচ্ছ আবেদন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ ওই ছাত্রদের পক্ষের আইনজীবীর এই আবেদন গ্রহণ করেন। ছাত্রদের নবান্ন অভিযানে সেসময় হাইকোর্টে পরিবারের লোক তাদের খুঁজে পেতে আবেদন করলে পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায়।যদিও মামলায় পুলিশ জানিয়েছিল যে, -‘ গোলমাল ছড়াতে পারে এই আশঙ্কায় তাদের আগাম গ্রেফতার করা হয়েছে’। কিন্তু কোনও এফআইআর করেনি পুলিশ। এই অবস্থায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ, ওই চারজনকে ক্ষতিপূরণ-সহ এক গুচ্ছ পদক্ষেপের আবেদন করা হয়। সেই আবেদন গ্রহণ করলেন বিচারপতি। এরপর এই মামলার শুনানি হবে। উল্লেখ্য, নবান্ন অভিযানের আগের দিন চার ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয় হাওড়া থেকে। কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয়। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চেই মামলার শুনানি চলে । পুলিশের এহেন আচরণ নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি, রাজ্যের হলফনামাও তলব করা হয়।শুক্রবার ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানের আগের দিন হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার হওয়া চার নেতার আবেদন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। তাঁদের আবেদন, -‘গ্রেফতারির ঘটনায় যুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে’। ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছিলেন ওই চারজন। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ তাঁদের আর্জি মঞ্জুর করে থাকে ।উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে গত ২৭ অক্টোবর নবান্ন অভিযান কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে এক সংগঠন । ঘটনার আগেরদিন রাতে গ্রেপ্তার করা হয় চারজন আন্দোলনকারী ছাত্র কে।পরবর্তীতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। এর পাশাপাশি ওই ছাত্রদের পরিবার হাইকোর্টে মামলা করলে পুলিশ চারজন ছাত্র কে মুক্তি দেয়।অতি সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ভরদ্বাজ তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান,-‘ ওই গ্রেফতারি আইন মেনে হয়েছিল কি না? সে বিষয়ে হলফনামা দিতে হবে রাজ্যকে। পাল্টা হলফনামা দিতে বলা হয় মামলাকারীদেরও। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ প্রশ্ন তুলেছিল যে, -‘যদি খুনের চেষ্টার ষড়যন্ত্রের অভিযোগেই ওই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে, তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হল? পুলিশের কাছে কী অভিযোগ ছিল? কোথা থেকে সেই তথ্য পাওয়া গিয়েছিল, তা নিয়েও গত শুনানি পর্বে প্রশ্ন তুলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট।এখন দেখার কলকাতা হাইকোর্টের এহেন অবস্থানে হাওড়া জেলা পুলিশ কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে?