চাকরীহারাদের একাংশের আবেদনে সাড়া দিল না কলকাতা হাইকোর্টের গ্রীষ্মকালীন বেঞ্চ

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

 আবার কলকাতা  হাইকোর্টের দ্বারস্থ চাকরিহারা ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের একাংশ । ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলায় নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে ৩০ মে বলে গত মঙ্গলবার  সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই পরিস্থিতিতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে ফের কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হলেন চাকরিহারা(অযোগ্য) শিক্ষকদের একাংশ।কারণ, গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর বাতিল হয়ে গিয়েছে রাজ্যের ২০১৬ সালের প্যানেলের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অ-শিক্ষক কর্মীদের চাকরি। বুধবার এই বিষয়ে ফের আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এসএলএসটি-র চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা। কিন্তু মামলা গ্রহণ করলেন না বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়।এই বিষয়ে আদালতে আবেদনকারী ‘অযোগ্য’ শিক্ষকরা বলেন, ”সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা স্কুলে যেতে পারছেন না। নতুন যে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হবে, সেখানেও তাঁরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এই পরিস্থিতিতে আদালত হস্তক্ষেপ করুক।” যদিও এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের  গ্রীষ্মকালীন বেঞ্চে বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় দাবি করে বলেন, ”এই বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ রয়েছে। তাছাড়া বিষয়টি এখন শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের গ্রীষ্মবকাশকালীন বেঞ্চ এই বিষয়ে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।” চাকরি বাতিল নিয়েও এর আগে র‍্যাঙ্ক জাম্পের অভিযোগে চাকরি হারানো প্রার্থীরা পৃথকভাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দুই ক্ষেত্রেই শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং কেবি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ তাঁদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তবে আবেদনকারী চাকরিহারা শিক্ষকরা দাবি করে জানান, -‘তাঁরা ১৮০৩ জন মতো ‘নট স্পেসিফিক্যালি টেন্টেড’ শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এখনও পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। তবুও তাঁরা স্কুলে যেতে পারছেন না, সরকারের বেতনও পাচ্ছেন না’। একই দাবিতে তাঁরা বুধবার সকালে হাজরা মোড়ে বিক্ষোভও দেখান। ঘটনায় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটকও করে কলকাতা পুলিশ।অন্যদিকে, গত মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে চাকরিহারাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”আমরা যারাই সরকার চালাই, আমাদের প্রত্যেককে আইন মেনে চলতে হয়। সংবিধান মেনে চলতে হয়। আইনের বাইরে গিয়ে আমরা যদি নিজেদের মতো করি, সেটা অন্যভাবে কোর্ট নিতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে রিভিউ পিটিশন করেছি। সুপ্রিম কোর্টে গরমের ছুটি চলছে। আমরা সঠিক সময়ে রিভিউ পিটিশন করেছি। আগের অর্ডার যদি আমরা বহন না করি তাহলে যদি ওরা বলে তোমরা অর্ডার মানোনি, সব বাতিল। এটা আমরা চাই না। আমরা সুপ্রিম নির্দেশ অনুযায়ী চলব।”রাজ্যের  মুখ্যমন্ত্রী  আরও বলেন, ”সুপ্রিম অর্ডার অনুযায়ী, ৩১ মে-র মধ্যে নোটিফিকেশন বের করব। আর রিভিউ পিটিশনে যদি ভালো অর্ডার পাই, তাহলে সেই অনুযায়ী যাব। ৩০ মে শিক্ষক নিয়োগের নোটিফিকেশন হবে। তারপর গ্রুপ-সি-গ্রুপ ডি দেখব। যাঁরা চাকরি করেছেন অথচ বয়স পেরিয়েছে, তাঁদের বয়সের জন্য আটকাবে না। এতদিন যাঁরা কাজ করেছেন তাঁদের অভিজ্ঞতার অ্যাডভানটেজ পাবেন। যাঁরা কাজ করছেন তাঁরা কাজ করে যান। প্রায় ১১ হাজার অ্যাডিশানাল ভ্যাকান্সি তৈরি করেছি নবম-দশমের জন্য। গ্রুপ সি-গ্রুপ ডি-র জন্যও অতিরিক্ত ভ্যাকান্সি তৈরি করা হয়েছে।”

Leave a Reply