কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের কাছে আরজিকর কান্ডে বহু চর্চিত প্রশ্নগুলির ‘উত্তর’ চাইলো কলকাতা হাইকোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাস আরজিকর মামলায় ফের সিবিআইয়ের রিপোর্ট চাইলো। আগামী ১৬ মে এর মধ্যে এই রিপোর্ট পেশ করতে হবে সিবিআই কে। চলতি সপ্তাহে আরজি কর কাণ্ডে শিয়ালদহ আদালতে তৃতীয় ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই । তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, -‘নতুন করে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের উল্লেখ করা হয়েছে ওই স্টেটাস রিপোর্টে। আর নজরে রাখা হয়েছে ২০০টি ভিডিয়ো ক্লিপের উপরও’। ইতিমধ্যেই আরজি কর কাণ্ডে মূল অভিযুক্তই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। গত বছর আগস্ট মাসের ৯ তারিখ আরজিকর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক চিকিৎসক পড়ুয়ার মৃতদেহ। ধর্ষণ, খুনের এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা বাংলাকে। এরপর দেখতে দেখতে প্রায় ৮ মাস কেটে গেলেও অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরা।এবার সেই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি আরজি কর ধর্ষণ খুন কাণ্ডে শিয়ালদহ আদালতে তৃতীয় স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, সেখানে নতুন করে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা উল্লেখ রয়েছে ও ২০০টি ভিডিও ক্লিপিংয়ের ওপর নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে এখনও এই মামলায় এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে যার উত্তর অধরা। নির্যাতিতার পরিবারও একাধিকবার তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।আরজি কর ধর্ষণ খুন কাণ্ডে এখনও বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। প্রথম, নিহত তরুণী চিকিৎসকের উচ্চতা ছিল ৫ ফুট ১ ইঞ্চি। সিসিটিভি ফুটেজ বলছে, ভোর ৪:০৩ থেকে ৪:৩৮ মিনিটের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ের মধ্যে কি ওই আঘাতগুলি করা কি সম্ভব? দ্বিতীয়, হাইকোর্টের তরফ থেকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া পর সেমিনার রুমের পাশের দেওয়াল কেন, কী উদ্দেশে ভাঙা হয়েছিল? কার নির্দেশে এই কাজ হয়?এছাড়া সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এই কাজ কি একজনের পক্ষে করা সম্ভব? নির্যাতিতা কি ঘটনার সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি? সিবিআই চার্জশিট বলছে, অভিযুক্ত সেই সময় মদের নেশার ছিলেন। তাহলে ওই সময়কালের মধ্যে এই নৃশংস কাজ তাঁর একার পক্ষে করা কি আদৌ সম্ভব? এমনই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি।এই বিষয়ে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছে , -‘ নিম্ন আদালতে এখনও বিচার চলছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। ট্রায়াল কোর্টে চার্জ গঠন, একজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। চ তাই ফের তদন্তের জন্য তথ্য দরকার’। সেক্ষেত্রেই তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে উচ্চ আদালত । আগামী ১৬ মে ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চার দেওয়ালের মধ্যে থেকে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ইতিমধ্যেই এই মামলায় কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে শিয়ালদহ আদালত। আমৃত্যু কারাবাস হয়েছে আসামির।নিম্ন আদালতে এখনও এই মামলার বিচার চলছে।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ বহু চর্চিত প্রশ্নগুলির উত্তর চাইলো সিবিআইয়ের কাছে,তা আগামী ১৬ মে এর মধ্যে উত্তর দিতে হবে সিবিআই কে।