কুমুদ সাহিত্য মেলা ২০২২

দিলীপ রঞ্জন ভাদুড়ী,

প্রাক্তন ডিএসপি, আইনজীবী,

কুমুদ সাহিত্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে ইং ৩ রা মার্চ।আমন্ত্রণ পেয়েছি যাবার জন্য।আমি অবসর প্রাপ্ত পুলিশ কর্মী।বহুবছর আগে পুলিশ বিভাগে চাকরি করেছি।বর্তমানে আমার আর আমাদের উত্তরসূরীদের সাথে তেমন কোন যোগাযোগ নেই বললেই চলে।যাঁদের সাথে আমি কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো চাকরিতে আছেন।তাঁদের মধ্যে কেউ আমাকে চেনেন,কেউ চিনতে পারেন না।এমন একজন ভাতৃপ্রতিম এসিপি সাহেব হলেন শ্রী অমিতাভ সেন।এই মেলায় তাঁকে ” মৃত্যুঞ্জয়ী সম্মান জানানো হবে। সত্যি এই খবর পেয়ে আমি খুব আনন্দিত হয়েছি। তিনি দুর্গাপুরে
সি আই থাকাকালীন নৈশ অভিযানে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে গুরুতর ভাবে মাথায় কোপ পেয়ে
কোমায় চলে গিয়েছিলেন।আসানসোল দুর্গাপুরের
পুলিশ কমিশনারেট তাঁকে বাঁচিয়ে তোলার জন্য
যে ভাবে এগিয়ে এসেছিলেন, তা অতি প্রশংসনীয়
বললেও কম বলা হয়।ব্যক্তি হিসেবে অমিতাভ সাহেব অত্যন্ত ভাল বলেই আমি জানি।তাঁর পরিবারের সাথে অল্প হলেও পরিচয় আছে। সে সময় তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের মর্মব্যথা খুব কাছ থেকে দেখেছি।তাঁর পরিজন সবাই তাঁর সাথে ছিল।মনের জোর ও অবতার বরিষ্ঠ রামকৃষ্ণ পরম হংসদেবের আশীর্বাদ ও অগণিত শুভাকাঙ্খী প্রার্থনায় তিনি ফিরে এসেছেন সবার মাঝে।তিনি
যথার্থই ” মৃত্যুঞ্জয়ী”। তিনিও আমার মত সাব ইন্সপেক্টর পদ থেকেই কর্ম জীবন শুরু করেছিলেন। পল্লীকবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের বাস্তুভিটায় হবে এই অনুষ্ঠান। এই গ্রামের বর্তমান নাম মোগ্রাম।পূর্বে এই গ্রামের নাম ছিল ” ,উজানি”.। থানা মঙ্গলকোট। অমিতাভ সাহেব এই
থানার নুতন ভবনের প্রথম বড়বাবু পদে আসীন হয়েছিলেন। তাই
মঙ্গলকোটে তাঁকে অনেকেই চেনেন।
প্রথম সংবাদটি পাই আমার প্রিয় ভাতৃপ্রতিম সাংবাদিক শ্রী প্রবীর চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে।তারপর প্রিয় সাংবাদিক জগন্নাথ ভৌমিকের কাছে।এরপর মেলা কমিটির পক্ষ থেকে জসিমউদ্দিন মোল্লা সাহেব ব্যক্তিগত ভাবে
আমার সাথে কথা বলেন।আমন্ত্রণ করেন।ওখানে
গুণীজনের সমাগম হবে।বিভিন্ন নক্ষত্রের সমাবেশ
হবে। কলকাতা হাইকোর্টের স্বনামধন্য আইনজীবী
গন আসবেন।বর্ধমান বারের গুণী আইনজীবী রা উপস্হিত থাকবেন ও সম্মানিত হবেন রত্ন হিসেবে।
বহু সাংবাদিক বন্ধুরা উপস্থিত হবেন। আমার
পঞ্চকবির এককবি কুমুদ রঞ্জনের ভিটে দেখার সৌভাগ্য হবে।এ আমার পরম প্রাপ্তি। কবি নিয়ে কিছু বলার আমার যোগ্যতা নেই। কিন্তু, তাঁর ” দারোগা” কবিতা টি উল্লেখ করার লোভ আমি
সামলাতে পারলাম না।

  "ভুতপূর্ব দারোগা এক দাগীরে কন ডাকি

দেশে তোদের চোরের সংখ্যা তেমনি আছে নাকি?
দাগী বলে একেবারে মিথ্যা নয় যা রটে
আপনি আসায় চোরের সংখ্যা কমতি কিছু বটে।
আমরা তো তাই দিবানিশি করছি তোলাপাড়া
হজুর বিনে হয়ে আছি অভিভাবক হারা।”
সাব ইন্সপেক্টর রা আগে ছিল দারোগা।পরে এই পরিভাষা লুপ্ত হয়। অমিতাভ সাহেবকে ভোলানাথ ভাদুড়ী রত্ন রূপে বরণ করা হবে। ভোলানাথ আমার মেজ ভাই ছিল। যদিও সেই
দুঃস্বপ্নের রাতকে আমরা ভুলতে চাই।কিন্তু, ভোলাকে এ জীবনে ভুলতে পারব না। তবুও বুকে ব্যথা নিয়েই যাব।
পল্লীকবির বাস্তু ভিটায় জানিয়ে আসব আমার শ্রদ্ধা ও প্রণাম।চাইব,আমাদের উত্তরসূরীরা
কেউ যেন প্রাণ না হারান। সাহিত্য মেলার কমিটির
প্রতি রইল কৃতজ্ঞতা ও কুর্নিশ।

Leave a Reply