কাঁসাই এর তীরে পরকুল মেলায় টুসু পরবে মাতল এলাকাবাসী

শুভদীপ ঋজু মন্ডল বাঁকুড়া:—– পৌষ মাসের শেষ দিন অর্থাৎ মকর সংক্রান্তি। এই দিনটি সারা দেশে একটি বিশেষ দিন হিসেবে পালিত হয় বাঙালির কাছে। এ বছর এই দিনেই মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে যা ১৪৪ বছর পর। স্বাধীন ভারতে এই প্রথম মহাকুম্ভ বলে জানা যায়। সারা দেশের বিভিন্ন নদীর তীরে এই পৌষ সংক্রান্তিতে মেলা বসে বিভিন্ন নদীর ঘাট গুলিতে পুণ্যার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী তিস্তা তোর্সা গোদাবরী ,দামোদর ,কংসাবতী শিলাবতী, দারকেশ্বর অজয় প্রভৃতি নদীর তীরে বিভিন্ন জায়গায় এই উপলক্ষে পুন্যাার্থীরা হাজির হয়ে বিশেষ বিশেষ স্থানে পূন্য স্নানে নেমে পড়েন। ভোর থেকে চলে এই পূন্য স্নান। এরকমই একটি জনপদ কংসাবতী নদীর কূলে পরকূল গ্রাম এই পরকূল গ্রামের নিকটে কংসাবতী নদীর পাড়ে একটি বটগাছের নিচে রয়েছেন মহাদেব মূলত তার পুজো এবং গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর পুজো হয়আজকের দিনে এখানে ।২০০ বছরের প্রাচীন এই মেলায় রায়পুর সারেঙ্গা, রনিবাঁধ, খাতড়া সিমলাপাল সহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ হাজির হন এবং আনন্দ উপভোগ করেন। গ্রামের মানুষরা এখান থেকেই ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন পাই কণা, পিড়ে, পাথরের থালা বাটি, চাকি বেলনা, শিলনোড়া,মাটির পুতুল ,টিনের টোকা সহ গৃহস্থালির জিনিস সংগ্রহ করেন। একদিনের এই পরকূল মেলায় একদিকে চলে বাউলের আখড়া অন্যদিকে টুসু গানের প্রতিযোগিতা। প্রাচীন বটগাছের নিচে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে টুসু প্রেমীরা তাদের আদরের টুসুকে নিয়ে নৃত্য করতে করতে মেলা প্রাঙ্গনে হাজির হন তারপর কাঁসাই নদীতে তাদের প্রাণপ্রিয় টুসু রানী কে বিসর্জন দিয়ে মনের দুঃখে বাড়ি ফিরে যান।কংসাবতী নদীর এই পরকুলে সকাল থেকেই মানুষজন হাজির হন এবং মকর স্নান করে পূন্য লাভ করেন। অনেকেই বলেন এই কংসাবতী নদী গঙ্গা নদীর সাথে মিশেছে তাই এটাকে আমরা গঙ্গা নদী বলে মনে করি। আজ এখানে স্নান করে গঙ্গাস্নান করলাম বলে জানালেন কাকড়া দারা এলাকার 62 বছরের যুগল মল্লিক ও তার পরিবার। মেলায় হরেক রকম জিনিস ছাড়াও রয়েছে পাঁচমুড়ার টেরাকোটার মাটির হাতি ঘোড়া। মেলায় বিশেষ আকর্ষণ জিলিপি ,আখ ও শাকআলু। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা প্রায় সকলেই এগুলি কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন আনন্দে। মেলাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে খাতড়া থানা পুলিশ সজাগ দৃষ্টি রেখে চলেছেন। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আজকের এই পরকূল মেলায় প্রায় ৪০ হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছিল বলে মেলা কমিটির পক্ষ থেকে জানা যায়।

Leave a Reply

You missed