কলকাতা হাইকোর্টে চিকিৎসার জন্য শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন কালীঘাটের কাকু

মোল্লা জসিমউদ্দিন,

কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডির মামলায় আগেই জামিন পেয়েছিলেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র । এবার সিবিআইয়ের মামলাতেও জামিন মঞ্জুর হল তাঁর । মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’-কে অন্তর্বর্তী জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানিয়েছে, -‘চিকিৎসা জন্য মানবিক কারণেই অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হলো অভিযুক্তকে’।সিবিআই মামলায় সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর। ৩১ মার্চ পর্যন্ত মামলার নিষ্পত্তি অবধি বজায় থাকবে শর্তসাপেক্ষ অন্তর্বতী জামিন। এমনটাই নির্দেশ বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় ডিভিশন বেঞ্চের। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ মার্চ।জামিনের শর্ত গুলি হলো, সিবিআই নজরদারি করবে।বেহালার বাড়ি ও হাসপাতাল ছাড়া কোথাও যেতে পারবে না। ২ টি মোবাইল ফোন নম্বর সিবিআইকে দিতে হবে। সিআরপিএফ মোতায়েন থাকবে। পরিবার, ডাক্তার, আইনজীবী ছাড়া কেউ দেখা করতে পারবে না। এই মামলায় সিবিআই জানায় , “আমাদের ২ দিন সময় দেওয়া হোক আমরা হাসপাতালে টেস্ট করে আদালতে জমা দেব।” প্রতুত্তরে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন “এই দুদিনে যদি তাঁর মৃত্যু হয়? আমরা একজনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ছিনিমিনি করতে পারি না। যেখানে অ্যাপোলো, বিএম বিড়লা হাসপাতাল যেখানে রিপোর্টে বলছে হারতে ২ থেকে ৩ টে ব্লকেজ আছে। সেখানে কী বলা যায়?”একইসঙ্গে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জামিন প্রসঙ্গে বলেন, “একজনের শারীরিক দুরবস্থা নিয়ে সিবিআই-এর ভূমিকাকে আদালত ভাল চোখে দেখছে না। অ্যাপোলো, বি এম বিড়লা হাসপাতাল যেখানে রিপোর্টে বলছে ২ থেকে ৩ টে ব্লকেজ আছে। সেখানে সময় নষ্টের প্রয়োজন আছে বলে আদালত মনে করছে না। তবে আদালত সম্পূর্ণ জামিনের পক্ষে নয়।”তাঁর অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত।উল্লেখ্য, বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, দু’টি বেসরকারি হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে আদালত উদ্বিগ্ন। অভিযুক্তের চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর এনজিওপ্লাস্টি করা দরকার। মামলার মূল বিষয় আদালত আপাতত বিবেচনা করছে না। শুধুমাত্র চিকিৎসা এবং মানবিক কারণে অন্তর্বতী জামিন দেওয়া হচ্ছে। এই সময়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচার করতে পারবেন অভিযুক্ত মামলাকারী।উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩০ মে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথমে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কালীঘাটের কাকু। গত বছর ডিসেম্বর মাসে হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার পরে তাঁকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখিয়েছিল সিবিআই। এ বার সেই মামলাতে অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন তিনি।শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে সুজয়কৃষ্ণকে। সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে নজরদারির জন্য সাদা পোশাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করতে পারবে সিবিআই। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন অভিযুক্ত। ব্যবহার করতে পারবেন ২টি মোবাইল ফোন। সেই ফোনে নজরদারি চালাতে পারবে সিবিআই। এই মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২০ মার্চ।

Leave a Reply