পরিশোধ

শমিতা সেনগুপ্ত দে রায়

“উফফ একটু জল! একটু জল দেবে ! কেউ কি আছে কাছে!”…

সৈনিকের শিরোস্ত্রানটি মাটিতে ভূলুণ্ঠিত। ধুলোয় মাখামাখি শরীর। তীর এসে সজোরে বিঁধেছে পিঠের বাম পাশে।
রক্তে ভেসে গেছে পরিধান।

দ্রুত পায়ে এগিয়ে এলো অবগুণ্ঠিত এক নারী। হাতে সুদৃশ্য জলদানী। ধীরে ধীরে জলের বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা আকারে মুখের মধ্যে প্রবেশ করলো সৈনিকের মুখাগহ্বরে।

“আহ!” উচ্চারিত হলো।

বছরের পর বছর অতিক্রান্ত। যুগ অতিবাহিত। যুদ্ধক্ষেত্র আজ শপিং মল , রেস্তোঁরা, এমিউসেমেন্ট পার্কে পর্যবসিত।

দ্রোনা হাঁফাতে হাঁফাতে এসে বসলো একটি সিমেন্টের স্ল্যাবে। হাতে অনেকগুলো পোশাকআশাকের প্যাকেট। গলা শুকিয়ে কাঠ। একটু জল হলে ভালো হতো। উফফ মাগো, ভীষণ জলতেষ্টায় গলা বুজে আসছে।
“এই নিন ম্যাম!”, চমকে তাকালো দ্রোনা। একটি সুবেশিত তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে একটি জলের বোতল।
কোন কথা না বলে পরম বিস্ময়ে জলের বোতলটি হাত থেকে নিয়ে জল গলায় ঢাললো। ঢক ঢক করে খেয়ে নিলো অনেকখানি।
“আঃ কী আরাম! বাঁচালেন আপনি!”,
সামনে কেউ কোথাও নেই। দ্রোনা এদিক ওদিক তাকালো। নাহ! কাউকে কোথাও দেখতে পেলো না।

যুগের পর যুগ ঋণ পরিশোধ হয়ে চলে। ভালো হোক কী মন্দ!

Leave a Reply