এমেচার যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা রাইপুর উদয়ন নাট্য সংস্থার ।


শুভদীপ মন্ডল বাঁকুড়া: ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ও -সুপ্রিয় যশ নির্দেশিত, শঙ্খদ্বীপ নন্দী সম্পাদিত রাইপুর সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী পূজা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাইপুর সবুজ সংঘ ফুটবল ময়দানে রাইপুর সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটির ব্যবস্থাপনায় রাইপুর উদয়ন নাট্য সংস্থার বলিষ্ঠ নিবেদন, ” পদধ্বনি”যাত্রাপালা মঞ্চস্থ হলো। যাত্রাপালা দেখতে কয়েক হাজার যাত্রামোদী দর্শক হাজির হয়েছিলেন ফুটবল ময়দানে । বিভিন্ন চরিত্রে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তারা হলেন শ্রীকুমার দুলে ,চিন্ময় সৎপতি, শঙ্খদীপ নন্দী, চন্দন ঘোষ, অচিন্ত্য দুলে, অজয় চ্যাটার্জী, শুভেন্দু সাধন,।মানস মন্ডল, শুভদীপ দাস, পূর্ণেন্দু মহাপাত্র, অভিজিৎ দে, তরুণ মন্ডল, সোনাই মুখার্জী, প্রিয়া মন্ডল, রুম্পা রায় ও কল্যাণী চক্রবর্তী প্রমুখ। উদয়ন নাট্য সংস্থা জঙ্গলমহলের একটি নামকরা যাত্রা অপেরা যারা সারা বছর যাত্রা নিয়ে কাজ করে। এই নাট্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিক্ষক শ্রীকুমার দুলে বলেন বর্তমান সমাজ একটা অবক্ষয়ের দিকে যাচ্ছে অপসংস্কৃতি গোটা সমাজকে গ্রাস করেছে। তাই পিছিয়ে পড়া যাত্রা সংস্কৃতির মরা গাঙে জোয়ার আনার প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাচ্ছে উদয়ন নাট্য সংস্থা। হারিয়ে যাওয়া যাত্রাশিল্পকে জাগিয়ে তোলার একটি প্রয়াস আমাদের অতীতে যাত্রা শিল্পের উপর মানুষের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। আমরা ছোটবেলায় বাবা মায়ের সাথে বাড়ি থেকে চার পাঁচ কিলোমিটার দূরে কলকাতার বিভিন্ন সংস্থার টিকিটের যাত্রা দেখতে ভিড় করতাম। তখন থেকেই যাত্রা তে অভিনয় করার খুব ইচ্ছে ছিল।এলাকার বিশিষ্ট যাত্রা মোদী ও সমাজসেবী তারাপদ মহাপাত্র নকুল দাস, শিক্ষক শিব শংকর মন্ডল, বিশ্বজিৎ বাঙ্গাল, জয় নাদ রা বলেন গ্রাম বাংলা থেকে যাত্রাশিল্পটি হারিয়ে যেতে বসেছে আমরা ছোটবেলায় শীতকালে কলকাতার বিভিন্ন অপেরা এবং এলাকার বিভিন্ন গ্রামের অনামী যাত্রাগুলো দেখতে ভিড় করতাম এখন আর সেই ভাবে যাত্রা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়নি ।কোথাও কোথাও হয়ে থাকে। এই যাত্রাশিল্পটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে রাইপুর উদয়ন নাট্য সংস্থা। পূজা কমিটির সভাপতি সাধণ কুমার মন্ডল ও সম্পাদক অশোক কুমার দে বলেন উদয়ন নাট্য সংস্থা যেভাবে যাত্রাশিল্পকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে তাতে আগামী দিনে যাত্রার প্রতি এই এলাকার মানুষের একটা বিশেষ নেশা তৈরি হবে। অতীতের মত গ্রামে গঞ্জে উদ্যোগী ছেলেমেয়েরা যাত্রা অনুষ্ঠান করার উদ্যোগ নেবে। আমরা ছোটবেলায় দেখেছি গ্রামের মানুষ এই ধরনের যাত্রা করতেন পুরুষরাই অনেক ক্ষেত্রে নারীর চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করে নিতেন।সকলের অভিনয় দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছে। তারা এই সংস্থাকে এলাকায় আরো একবার এই পালাটি উপস্থাপনা করার আবেদন জানিয়েছেন ।আজকের যাত্রাপালায় চার হাজারেরও বেশি যাত্রাপ্রেমী মানুষ হাজির হয়েছিলেন। তবে উল্লেখ্য পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। যাত্রাপালাটি কি সাফল্যমণ্ডিত করতে যাদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য তারা হলেন আলো ধ্বনি ও সাজ সজ্জায় জয়গুরু নাট্যমন্দির পখন্না। দক্ষিণ বাঁকুড়ায় এই নাট্য সংস্থার এটি ছিল ষষ্ঠ রজনী।

Leave a Reply