খায়রুল আনাম,
বীরভূম : শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনে প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারী অমর একুশে পালিত হলেও, এবার তা হচ্ছে না। এমনটাই জানিয়ে দিলো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পরিবর্তে শান্তিনিকেতনে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় সংহতি কেন্দ্রে অমর একুশের মাতৃভাষা দিবস পালন করা হবে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এটিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ ও বিশ্বভারতীর আচার্য তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত দিয়ে ২০১৮ সালের ২৫ মে এই বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই প্রতি বছর অমর একুশের অনুষ্ঠান হয়ে আসছিলো। ব্যতিক্রম ঘটছে এবার। বিশ্বভারতীর দেওয়া জায়গায় এই বাংলাদেশ ভবন নির্মাণ ব্যয় ৪০ কোটি টাকার সবটাই বহন করে বাংলাদেশের তৎকালীন হাসিনা সরকার। সেই সময় বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের তৎপরতায় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে একই মঞ্চে এনে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। ভারতের রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্বভারতীর পরিদর্শক প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বংলাদেশ ভবন পরিচালনার ব্যয়ও বহন করে বাংলাদেশ সরকার। এজন্য হাসিনা সরকার ১০ কোটি টাকার একটি তহবিল তৈরী করে দেন। সেই অর্থের সুদ থেকেই বাংলাদেশ ভবন পরিচালিত হয়। ভারত সরকার তথা বিশ্বভারতীর আচার্য নরেন্দ্র মোদী সম পরিমাণ অর্থ স্থায়ী আমানতে বাংলাদেশ ভবনকে দেওয়ার কথা বললেও, তা আজও দেওয়া হয়নি। এবার বাংলাদেশ ভবনে অমর একুশের অনুষ্ঠান না করার জন্য বাংলাদেশ ভবন মেরামতের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই অনুষ্ঠান হয় বাংলাদেশ ভবন চত্বরের উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে, ভবনের ভিতরে নয়। এখানেনস্বাধীনন বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি রয়েছে। আর বর্তমান বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙে তার স্মৃতি যেখানে মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে সেখানে শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনে অমর একুশে পালনের ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না বলেই, এই স্থান বদল বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে শান্তিনিকেতনে ৩৫ জন বাংলাদেশের পড়ুয়া রয়েছেন।