Spread the love

 উত্তরবঙ্গের মেডিকেল কলেজের ৫ ছাত্রের সাসপেনশন স্থগিত রাখলো কলকাতা হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ‘থ্রেট কালচারের’ অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলে । কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ  হয়েছেন সাসপেন্ড হওয়া পাঁচ ছাত্র। এদিন পাঁচ ছাত্রকে ক্লাস করার এবং পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তবে ক্লাসে যোগ আর পরীক্ষায় বসা ছাড়া আর কোনও কাজের জন্য কলেজে যাবেন না পাঁচ ছাত্র।তাও আদেশনামায় উল্লেখ করেছেন বিচারপতি।মঙ্গলবার শুনানির সময়ে সাসপেন্ডেড ছাত্ররা আদালতে সওয়াল করে জানান, -‘ কোনও নিয়ম না মেনে ৬ মাসের জন্য তাঁদের সাসপেন্ড করেছে কলেজ’। অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির মতামত না নিয়েই সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি। তাঁরা হাইকোর্ট কে জানান, “আমাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি।” সাসপেন্ডের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করারও আবেদন করেন তাঁরা। এর প্রতুত্তরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে , -‘কলেজের উচ্চপদস্থ কর্তাদের ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। সে সময়ে কর্তৃপক্ষের তরফে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তারপর ঘেরাও ওঠে। আমরা চাপের মুখে তক্ষুনি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই। তা না হলে আমরা যদি হাসপাতাল বন্ধ করে দিতাম তাহলে রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। আর কোনও বিকল্প না থাকায় আমরা বিক্ষোভকারীদের দাবি অনুযায়ী পদক্ষেপ করি।’  কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে কলেজ কর্তৃপক্ষ এটাও জানায়,-  “অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা অভিযোগের গুরুত্ব খতিয়ে দেখি। তারপর অনুসন্ধান কমিটি করতে হয়”।সেসময়  রাজ্যের তরফে বলা হয়, -‘কলেজে কর্তৃপক্ষকে বেলাগাম গতিতে কাজ করতে হয়েছে’। ৫ সপ্তাহ পরে ফের শুনানি রয়েছে ।এদিন কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, -‘ ওই পাঁচ ছাত্র কলেজে ক্লাস করতে পারবেন এবং পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এছাড়া অকারণে কলেজ ক্যাম্পাসে তাঁরা থাকতে পারবেন না’। সাসপেন্ড হওয়া পাঁচ ছাত্রর হয়ে এদিন আদালতে মামলাটি লড়েন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ৭ জন ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীকে সাসপেন্ড করেছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের ক্লাস এবং হস্টেলে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়। ওই মামলায় গত ৮ নভেম্বর কলকাতা বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের ক্লাস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিনও সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের হয়ে মামলাটি লড়েছিলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিন এজলাসে আইনজীবী  কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়  বলেন, “পড়ুয়াদের সাসপেন্ড করার ক্ষমতা কলেজ কাউন্সিলের নেই। এটা করতে পারে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল।আন্দোলনকারীদের থ্রেটের মুখে পড়ে ওই  ছাত্রছাত্রীকে সাসপেন্ড করতে বাধ্য হয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এটা কি থ্রেট কালচার নয়?”আরজি কর কাণ্ডের জেরে সামনে আসে থ্রেট কালচার। যার জেরে আরজি কর, বর্ধমান, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল-সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কমিটি গড়ে একাধিক ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীকে সাসপেন্ড করেছিল। সম্প্রতি নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক থেকে এ ব্যাপারে বড় প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। আরজি করের অধ্যক্ষর উদ্দেশে জানতে চেয়েছিলেন, “স্বাস্থ্যবিভাগকে না জানিয়ে কীভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত এভাবে নষ্ট করে দিতে পারে?”আগামী ৫ সপ্তাহ পরে উত্তরবঙ্গের এই মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *