ইউনেস্কোর অনুপ্রেরণায় “বাঙালি বিশ্বকোষের”ব্যবস্থাপনায় পৃথ্বীরাজ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান
কলকাতার সল্টলেকের ভারতীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের রঙ্গমঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান, যার মূল আয়োজন ছিল ইউনেস্কোর অনুপ্রেরণায় এবং “বাঙালি বিশ্বকোষের” ব্যবস্থাপনায়। বিশ্বসাহিত্যে বাংলা ভাষায় ২০০০-র বেশি গ্রন্থ রচনা করে কিংবদন্তির মর্যাদা অর্জনকারী পৃথ্বীরাজ সেনের ৬৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হলো একবিংশ শতাব্দীর ২০ জন বিশিষ্ট বাঙালিকে।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের পরমানন্দজি মহারাজের প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হিঙ্গলগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ কামাল উদ্দিন। এই বিশেষ সম্বর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব অনিমেষ শাস্ত্রী, ডঃ সাধন রায়, কৌশিক সরদার, শ্রী কৃষ্ণপদ দাস, অধ্যাপক স্বরূপ মালাকার, ডঃ নার্গিস বেগম, ডঃ মল্লিকা ব্যানার্জি, দিব্যেনন্দু বোস, স্বপন দত্ত বাউল এবং গণেশ বাউল। প্রায় ৮০০-র বেশি দর্শকের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে এক অনন্য মাত্রা যোগ করে। একই মঞ্চে উন্মোচন হয় পৃথ্বীরাজ সেন ও আব্দুল করিমের যৌথ সম্পাদনায় বিশ্ব বাংলা কবিতা সংগ্রহ এবং একবিংশ শতাব্দীর সেরা বাঙালি দুটি বই তৎসহ কবি ও শিশু সাহিত্যিক আব্দুল করিমের সম্পাদনায় শ্রদ্ধায় ভালোবাসায় পৃথ্বীরাজ বইটি উন্মোচিত হয়।
কলকাতার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শ্রীমতি জহর নন্দী বিদ্যাপীঠের ছাত্রীরা নৃত্য, গান, কবিতা আবৃত্তি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে। “বাঙালি বিশ্বকোষের” মুখ্য ব্যবস্থাপক আব্দুল করিম স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন এবং বিশ্বব্যাপী কৃতি বাঙালিদের এই উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
ইউনেস্কো এবং ভারতীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের উদ্যোগে একবিংশ শতাব্দীর ২০ জন বিশিষ্ট বাঙালিকে এই বিশেষ সম্মান প্রদান করা হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন হালিমা বেগম, ডঃ আকবর আলী, অনিতা মুখার্জি, বলাই চন্দ্র মণ্ডল, অচিন্ত্য কুমার সরকার, আবু কওছার, মহাদেব গুড়িয়া, ডঃ আবু তাহের, ডঃ মুহাম্মদ মানোয়ার হোসেন, ডঃ দীপ্তি মুখোপাধ্যায়, অজিত মণ্ডল, অমর চাঁদ কুন্ডু, মৃণাল কান্তি, শিবসম্ম বিশ্বাস, নূর নবী জমাদার, উমাশঙ্কর মণ্ডল, জুনফিনা আলি, বিভাস দাস, নূর হোসেন মণ্ডল ও নমিতা (হাসদা) টুডু।
সমগ্র অনুষ্ঠান বিনামূল্যে উপভোগ করতে আসা অতিথিদের জন্য ছিল আকর্ষণীয় ব্যাজ, মেমেন্টো, লাঞ্চ প্যাকেট, উত্তরীয় ও সার্টিফিকেট। এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আরও অনেক বিশিষ্টজন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন কলকাতা শেরিফ ডঃ সাধন রায়, শহীদ বসন্ত বিশ্বাস স্মারক সমিতির সম্পাদক তরুণ বিশ্বাস, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী অনির্বাণ দাস, পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত বিজ্ঞানী নারায়ণ চক্রবর্তী, বিশ্ববন্দিত জ্যোতিষী অনিমেষ শাস্ত্রী, ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কনভেনর অফ ইন্ডিয়ার সচিব অঞ্জন মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী অজয় দিন্দা ও মণিকণা উপাধ্যায়, বিখ্যাত জ্যোতিষী আচার্য্য চন্দ্রানী ভট্টাচার্য্য, কবি ও সমাজকর্মী দীপ্তিমান বসু, বিশিষ্ট কবি নিলাদ্রী বিশ্বাস এবং জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সুমিত্রা রায়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে উপস্থিত অতিথিরা বিশ্বব্যাপী কৃতি বাঙালিদের “বাঙালি বিশ্বকোষে” যুক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় এই বিশেষ অনুষ্ঠান।