পারিজাত মোল্লা , আসানসোল ,
আগামী ১২ এপ্রিল রাজ্যের দুটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে।একটি আসানসোল লোকসভা এবং অপরটি বালিগঞ্জ বিধানসভা।১৬ এপ্রিল ভোট গণনা আছে। এবার আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয়ের আসনেই প্রার্থী বলিউঠের বর্ষীয়ান অভিনেতা। বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসার পরই আসানসোলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয় বাবুল সুপ্রিয় কে।এই লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে, এই ঘোষণা আগেই করা হয়েছিল। তবে গত রবিবার বড় চমক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আসানসোল কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হতে চলেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী-সাংসদ তথা বর্ষীয়ান অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা । গত রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই টুইট করে জানিয়েছেন এই কথা।জাতীয় কংগ্রেস থেকে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করা শত্রুঘ্ন সিনহা অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারে থাকাকালীন পটনা সাহিব থেকে বিজেপির সাংসদ ছিলেন। পরে তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। বিহারী বাবু এবার আসানসোল থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হতে চলেছেন।গায়ক অভিনেতা বাবুল সুপ্রিয়ও শত্রুঘ্ন সিনহার মতো বিজেপি ছেড়েই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। বিজেপিতে থাকাকালীন আসানসোল থেকেই লোকসভার সাংসদ ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়।গত ২০১৪ সালে বাবুলের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয়েছিল দোলা সেনকে। সেই সময় ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির বাবুল সুপ্রিয় । এরপর ২০১৯ সালে বাবুলের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয় মুনমুন সেনকে। সেবারও লক্ষাধিক ভোটে তাঁকে হারিয়ে দেন বাবুল সুপ্রিয় । এবার তার জায়গাতেই তৃণমূল প্রার্থী হতে চলেছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে বাঙালির পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষও বসবাস করে থাকেন। অবাঙালি ভোটবাক্স দখলে শত্রুঘ্ন সিনহা কে তৃণমূল তুরুপের তাস করছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার থাকাকালীন শত্রুঘ্ন সিনহা একদিকে যেমন পরিবহন, পর্যটন ও সংস্কৃতির মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছিলেন, তেমনই আবার ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল অবধি তিনি বিদেশমন্ত্রক ও বিদেশে ভারতীয় নীতির বিষয়েও পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেছিলেন। বিহারি বাবু শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে আসানসোলের যোগ রয়েছে, তবে তা সরাসরি নয়। ১৯৭৯ সালে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে এক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা। সেই সিনেমাটি কয়লা খাদান প্রেক্ষাপটেই তৈরি হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আসানসোলে এবার বিজেপির তরফেও অবাঙালি কোনও মুখকেই প্রার্থী করা হতে পারে। এক্ষেত্রে যে নামটি সবার আগে উঠে আসছে, তা হল জিতেন্দ্র তিওয়ারি, তিনি আসানসোল পুরসভার মেয়র ছিলেন । অন্যদিকে, সিপিআইএমের তরফে মীনাক্ষী মুখ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা হতে পারে, কারণ তিনি আসানসোলেরই মেয়ে। লোকসভায় বিজেপির শক্তঘাটি হিসাবে আসানসোল ২০১৪ সাল থেকে যে পরিচিতি দিয়েছে, সেই পরিচিতি কি ভাঙবেন তৃনমূলের বিহারীবাবু? এই প্রশ্ন এখন আসানসোলের রাজনৈতিক মহলে।