আসানসোল পুরনিগম ভোটে জোট হলোনা কংগ্রেস বামেদের
পারিজাত মোল্লা , আসানসোল ;
আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের চারটি পুরনিগমে ভোট রয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল পুরনিগম অন্যতম। শাসক দল তৃণমূল সু সংগঠিত থাকলেও বিরোধী শিবির ছন্নছাড়া। বিশেষত বামফ্রন্ট এবং জাতীয় কংগ্রেসের অবস্থা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। ইতিমধ্যেই জাতীয় কংগ্রেস এবং বাম ছেড়ে অনেকেই তৃণমূলে নাম লিখিয়ে রেখেছেন। আসানসোল পুরনিগম ভোটে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হল না। গত বুধবার পশ্চিম বর্ধমান জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দাবি নেতৃত্বের।আজ কিংবা কালের মধ্যেই আসানসোল পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডেই বামফ্রন্ট প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে বলে সূত্রের দাবি।বৃহস্পতিবার আসানসোলে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি ও ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতৃত্ব।জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক বংশগোপাল চৌধুরী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত বার বামফ্রন্টের চার শরিক যতগুলি করে প্রার্থী দিয়েছিল, এ বারও তাই হবে। কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের কোনও আসন সমঝোতা হয়নি। প্রস্তাব এলেও তা বিবেচনা করা হবে না।’ বামফ্রন্টের বৈঠক অনুযায়ী, সিপিএম ৬৫টি, ফরোয়ার্ড ব্লক, সিপিআই ১৫টি করে এবং আরএসপি ১১টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দেবে বলে জানা গেছে । আসানসোলের মাটিতে কংগ্রেস কে নিয়ে বামেদের এই পরিস্থিতি তৈরি হল কেন? বাম নেতারা জানিয়েছেন , ‘খনি ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বাঁচানোর আন্দোলন, ধর্মঘট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ কর্মসূচি, কোনও ক্ষেত্রেই যৌথ ভূমিকায় দেখা যায়নি জেলা কংগ্রেসকে। এরফলে, ওই দলের সঙ্গে বছরভর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখা সম্ভব হয়নি।’ এ দিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, ‘রাজ্য নেতৃত্ব আমাদের আঞ্চলিক স্তরে আসন সমঝোতার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এখানে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে চলাটা স্থানীয় বাম নেতা, কর্মীদের অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে না।’পাল্টা, সরব হয়েছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বও। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাজ্য নেতৃত্বের আগ্রহ থাকলেও আঞ্চলিক স্তরে বামেদের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা করার মতো পরিস্থিতি নেই। কংগ্রেসের দাবি, ‘আমরা জোট চাইনি বলেই ওঁদের কাছে প্রস্তাব পাঠাইনি। ওঁদের কাছে মাথা ঝোঁকানোর প্রশ্নই নেই। একাই সব আসনে লড়ব আমরা। ৩১ জানুয়ারি প্রার্থিতালিকা প্রকাশ হবে জাতীয় কংগ্রেস এর।’ গত ২০১৫-র পুরভোটে বামফ্রন্ট ৫টি, কংগ্রেস ৩ টি ওয়ার্ডে জিতেছিল। বামফ্রন্টের ৫ জন কাউন্সিলর এবং কংগ্রেসের ৩ জন কাউন্সিলরই পরে তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিকে, ২০১৯-এর লোকসভা এবং ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে আসানসোল পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডের ১ টিতেও এগিয়ে ছিল না সংযুক্ত মোর্চা।তাই বামেদের সাথে জাতীয় কংগ্রেসের জোট হলো কি, হলো না, তা নিয়ে চিন্তিত নয় আসানসোল তৃনমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।