আমডাঙ্গায় জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে রাজ্য কে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন

বৃহস্পতিবার রাজ্যের জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে গুরত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । স্থানীয় জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে রাজ্যকে সুবজ সঙ্কেত প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের। ১ মার্চ থেকে সম্প্রসারণের কাজে ঝাঁপাতে নির্দেশ।আগামী ১ মার্চের মধ্যে পুলিশের সহযোগিতায় সমস্ত বেদখল উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ।একই সঙ্গে দ্রুত ১২ নম্বর জাতীয় সম্প্রসারণের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।কলকাতার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। বারাসতের ডাকবাংলো মোড় থেকে শুরু হয়েছে এই ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। দ্রুত যোগাযোগের জন্য জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে কেন্দ্রের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে বারাসত থেকে আমডাঙার সন্তোষপুর পর্যন্ত রাস্তার সম্প্রসারণ হয়েছে।কিন্তু আমডাঙার সন্তোষপুর থেকে রাজবেড়িয়া মোড় পর্যন্ত ২১টি মৌজার প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তার সম্প্রসারণ আটকে রয়েছে দীর্ঘদিন। এখানে জমির মালিকের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। সঠিক ক্ষতিপূরণের দাবিতে ন্যায্য অধিকার রক্ষা কমিটির ব্যানারে আন্দোলন করেছেন জমির মালিকরা। গত সোমবার সকালে নতুন করে মাপতে গেলে ফের আপত্তি জানান তাঁরা।আদালতে জমা দেওয়া আদালতবান্ধব আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ীর রিপোর্টে জানিয়েছেন , -‘সরকারি জমি জবরদখলকারীদের বাধায় আটকে যাচ্ছে কাজ। জেলা শাসকের সঙ্গে বৈঠকে দেখা যাচ্ছে সড়কের কাজের জন্য যাঁদের থেকে জমি নেওয়া হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সত্ত্বেও কাজ করতে পারছেন না কনট্রাক্টররা। স্থানীয় লোকজন আন্দোলন করছে। উত্তর ২৪ পরগানার আমডাঙা-সহ বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা করছেন স্থানীয়দের একাংশ । এখনও পর্যন্ত যাঁদের থেকেজমি নেওয়া হয়েছিল, তাঁদের সর্বমোট প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও জবরদখলকারীরা কাজ করতে দিচ্ছে না। সরকারি জমিতে এনএইচএআই কতৃপক্ষ কাজ করতে পারছে না স্থানীয়দের অসহযোগীতায়’।রাজ্যের আইনজীবী বলেন, -‘প্রায় ৯৫% লোককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এই বিষয়ে কতৃপক্ষের বৈঠক হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিলে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থিততে কাজ শুরু করা যাবে’এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি বিভাষ পট্রনায়কের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেন,-‘ বারাসতের যে অংশে কাজ করতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে ঠিকাদাররা, সেখানে জেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করবে। জেলা প্রশাসনে পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকলে জেলার রিজার্ভ ফোর্সের সহযোগিতা মিলবে। জেলায় উপস্থিত আধা সামরিক বাহিনী থাকলে রাজ্য প্রশাসন প্রয়োজন মতো তাদের কাজে লাগাতে পারে’।আদালতের নির্দেশ, ১ মার্চ কাজ শুরু করতে হবে। উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়া মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসককেও এই ব্যাপারে জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে। যাতে দ্রুত কাজ শেষ হয় তারজন্য উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি ও আপিপুরদুয়ারে বৈঠক করবেন আদালতবান্ধব। ওই বৈঠকে এনএইচএআই কতৃপক্ষ, ঠিকাদার, জেলা শাসক ও জেলার পুলিশ সুপার বা কমিশনারদের উপস্থিত থাকতে হবে। আদালতের নির্দেশ কার্যকরী হল কি না? সেই বিষয়ে একটি রিপোর্ট আগামী ২৭ মার্চ আদালতে জমা করতে হবে।মামলাকারী আইনজীবীদের মধ্যে কল্যাণ চক্রবর্তী অন্যতম রয়েছেন বলে জানা গেছে।

Leave a Reply