‘আধার – ভোটার কার্ড থাকলেই তিনি ভারতীয়?’ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
‘আধার-ভোটার কার্ড থাকলেই তিনি ভারতীয়? ‘ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে প্রশ্ন বিচারপতি দেবাংশু বসাকের। ‘অনুপ্রবেশকারী অনেক বাংলাদেশি নাগরিকের জাল আধার-ভোটার-রেশন কার্ড আছে, কেউ কেউ নিজেকে এদেশের নাগরিক প্রমাণ করতে আয়করও দেন।’ এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই পর্যবেক্ষণ বিচারপতির। জাল পাসপোর্ট মামলায় কড়া মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড থাকলেই ভারতীয় নাকি! এই ধরনের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড রয়েছে বহু বাংলাদেশির কাছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করার জন্য ট্যাক্সও দিচ্ছে। জাল পাসপোর্ট মামলায় এমনই কড়া মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক।অনুপ্রবেশের অভিযোগে এক বছর আগে বর্ধমানের এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই মামলার শুনানি চলাকালীনই একাধিক উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করলেন বিচারপতি বসাক। তাদের জামিন মামলার শুনানিতে ওই মন্তব্য করেন বিচারপতি বসাক। আমেরিকা থেকে যাদের বের করে দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকে ক্ষেত্রে এরকম দেখা গিয়েছে। এমনটাই মন্তব্য করেন বিচারপতি।আদালতে জামিনের আবেদনকারী দম্পতির আইনজীবীর দাবি ছিল, -‘দেশের আইন হল ২০১৪ সালের পর যারা এদেশে আসবেন তারা অনুপ্রবেশকারী। কিন্তু ওই দম্পত্তি ২০১০ সালে এদেশে এসেছেন। এর ফলে তাঁরা অনুপ্রবেশকারী হবেন কীভাবে? তাই তারা জামিন চেয়েছেন’।অভিযুক্তের আইনজীবীর ওই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। পুলিস তদন্ত করছে। শেষপর্যন্ত জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে যায়।প্রায় এক বছর আগে বর্ধমান থেকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা জামিনের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এ মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচারপতি বলেন , -‘ আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড থাকলেই তিনি ভারতের নাগরিক এটা কী করে প্রমাণ হয় ? বহু অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি আছেন যাঁদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং পাসপোর্ট বানিয়ে এখানে বসবাস করছেন। এঁদের মধ্যে অনেকে আয়করও দেন নিজেকে এ দেশের নাগরিক বলে প্রমাণ করার জন্য ‘। ফলে তাঁরা যে দাবি করছেন যে, তাঁরা এ দেশের নাগরিক এবং তাঁদের সঠিক পাসপোর্ট রয়েছে, সেটা নিয়েই বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন তুলেছেন। এর পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন যে, -‘আমেরিকার ক্ষেত্রে এরকম দেখা যাচ্ছে বহু ক্ষেত্রে। সেই কারণে আমেরিকায় সেই সমস্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে সেখান থেকে তাঁদের বের করে দেওয়া হচ্ছে’।এর ফলে, জামিনের জন্য যে আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে এই দম্পতি করেছিলেন, সেই আবেদন খারিজ করে এই মামলার নিষ্পত্তি করা হয়।