Spread the love

বিশেষ অনুসন্ধান কমিটির আপিল পিটিশনে ‘গ্রুপ ডি’ নিয়োগ মামলায় আজ ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি? 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

আজ অর্থাৎ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে হতে চলেছে গ্রুপ ডি মামলায় ৫৭৩ জনের চাকরি বাতিল ঘোষণার আপিল পিটিশনের শুনানি।এসএসসি-র গ্রুপ ডি’র  বেআইনি নিয়োগ বাতিলকে চ্যালেঞ্জ করে এবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হল বিশেষ অনুসন্ধান কমিটি। কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হওয়ার কথা  আজ অর্থাৎ সোমবার। বিশেষ অনুসন্ধান কমিটির একটি প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টও দেওয়ার কথা আজ।গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে গ্রুপ ডি মামলায় বরখাস্তের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গেল বিশেষ অনুসন্ধান কমিটি । এই বিশেষ অনুসন্ধান কমিটি আগেকার ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে।  গত বুধবার  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে নজিরবিহীন নির্দেশ জারি করা হয়েছে এসএসসির গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে।একাধারে একসাথে ৫৭৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ পাশাপাশি এইসব  ঘোষিত বাতিল নিয়োগভুক্ত ব্যক্তিদের বেতন পুনরুদ্ধারের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এতে খুশি সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা।ওইদিন গ্রুপ ডি  কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ। গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়েরসিঙ্গেল  বেঞ্চের নির্দেশ, নিয়ম না মেনে যে ৫৭৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের বরখাস্ত করতে হবে। ওই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, -‘ এত দিন পর্যন্ত ওই কর্মীদের যা বেতন দেওয়া হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করতে হবে। সেই কাজ কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা স্কুল পর্যবেক্ষকদের। পাশাপাশি, এই ঘটনার তদন্তে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে কমিটি গঠন করেছিল সেই কমিটিকেও পাঁচ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে বলেছে সিঙ্গেল  বেঞ্চ।গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে তৈরি কমিটি ওই তদন্ত করছে। তাদের ১৪ ফেব্রুয়ারির তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশের নির্দেশ আদালতের।শুরুতে মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, দুর্নীতি করে ২৫ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে। নথি খতিয়ে দেখে তাঁদের বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেয় আদালত। পরবর্তী সময়ে আরও ৫০০-রও বেশি পদে অস্বচ্ছ নিয়োগের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই কর্মীদের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী  জানিয়েছেন , ‘আদালতের পর্যবেক্ষণ – এ ক্ষেত্রে আকাশছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে। জনগণের টাকা থেকে এ রকম দুর্নীতি হতে পারে না। তাই বেতন ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।’পাশাপাশি যে বেতন এখন অবধি পেয়েছেন তা উদ্ধার করার জন্য জেলা স্কুল পর্যবেক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের কমিটিকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ হাইকোর্টের। গত মাসেই বড় স্বস্তি পেয়েছিল নবান্ন। গ্রুপ ডি নিয়োগে  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল,-‘  গ্রুপ ডি নিয়োগে কী অনিয়ম হয়েছে তা অনুসন্ধানের জন্য সিবিআই-কে ডাকার প্রয়োজন নেই। এ ব্যাপারে প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গড়ার বিষয়ে সায় দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ’। আদালত জানিয়েছিল, প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে তৈরি করা হয়েছে গ্ৰুপ-ডি নিয়োগ মামলার বিশেষ তদন্তকারী দল। তারাই এসএসসি-র গ্রুপ ডি নিয়োগের তদন্ত করবে। দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সিঙ্গল বেঞ্চ নিয়োগ হওয়া কর্মীদের বেতন বন্ধের যে নির্দেশ দিয়েছিল তাও খারিজ করে দিয়েছিল। আদালত বলেছিল, এভাবে হঠাত্‍ করে কারও বেতন বন্ধ করা যায় না। আগামী দু’মাস যতক্ষণ না এই কমিটি রিপোর্ট জমা দিচ্ছে ততদিন নিয়োগ হওয়া কর্মীরা কাজ করবেন এবং তাঁদের বেতনও দিতে হবে। সিঙ্গল বেঞ্চ যে ভাবে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল তাকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার। সিঙ্গল বেঞ্চ কার্যত পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তুলোধনা করেছিল। বলেছিল, দুর্নীতির ঘুঘুর বাসায় পরিণত হয়েছে। সেদিক থেকে ডিভিশন বেঞ্চের রায় স্বস্তিই দিয়েছিল নবান্নকে। তবে গত বুধবার  হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। ৫৭৩ জনকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিল আদালত। বেতনও বন্ধ করতে হবে, যে বেতন এখন অবধি দেওয়া হয়েছে ত উদ্ধারও করতে হবে।জানা গেছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে এসএসসির আইনজীবীদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ রাজ্য।আগেকার ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী গঠিত এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে বিশেষ অনুসন্ধান কমিটি সিঙ্গেল বেঞ্চের ৫৭৩ জনের চাকরি বাতিল ঘোষণার বিরুদ্ধে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এর ডিভিশন বেঞ্চে আপিল পিটিশন দাখিল করে থাকে। আজ অর্থাৎ সোমবার এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *